আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও ধারাবাহিক মুক্তিযুদ্ধের ও স্বাধীনতার  ইতিহাস গাঁথা ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    ধারাবাহিক মুক্তিযুদ্ধের ও স্বাধীনতার  ইতিহাস গাঁথা


    মুক্তিযুদ্ধের ও স্বাধীনতার  ইতিহাস গাঁথা

    সানজিদা রুমি---

    আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ! বড় ভালোবাসার দেশ ! বড় মমতাময়ী দেশ!শুধু একটি পতাকা নয়!নয় একটি মানচিত্র।এ বাঙালী জাতির অস্তিত্ব! উপরে মুক্ত যে আকাশ- যে বাতাসে বুকভরে নিঃশ্বাস নেই, আমার বাংলাদেশ আমরা স্বাধীন বলে গর্বিত হই তা
     ৩০ লক্ষ বাঙালীর রক্তে ও প্রায় ৩ লক্ষ মা বোনের মান ও সম্ভ্রমের বিনিময় অর্জিত। তাঁদের ঋণ কোনদিন শোধ করা যাবে না।তাঁদের আত্ম ত্যাগের কথা,তাঁদের জীবনী মুক্তিযুদ্ধের ও স্বাধীনতার ইতিহাস জেনে তাঁদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে পারি। তবে হয়তো কিছুটা তাঁদের আত্মা শান্তি পাবে।

    যে কোনো ইতিহাস বর্ণনা করতে হলে সেই সময়ের আগের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করা অতীব জরুরি। তাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস জানার জন্যেও একটু আগে গিয়ে ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করা প্রয়োজন। বিশদ পর্যালোচনা নয় এখানে প্রধান, ও মুখ্য বিষয় প্রতিপাদ্য। ১৭৫৭ সালে পলাশীর মাঠে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা লর্ড ক্লাইভের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ বাহিনীর সঙ্গে মরণপণ যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন।



    যদিও এই পরাজয়ের কারণ নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি মীর জাফর আলি ও তার অনুচরদের বিশ্বাসঘাতকতা। পৃথিবীর ইতিহাসে এই বিশ্বাসঘাতকতা বিরল নয়। এই পরাজয়ের মধ্য যুদ্ধে মধ্য দিয়েই বাংলার স্বাধীনতার সূর্য প্রায় দু’ শ’ বছরের জন্য অস্তমিত যায়।শুরু হয় ইংরেজ শাসকদের অত্যাচার, অনাচার, নির্যাতন আর বঞ্চনার নির্মম ইতিহাস। বাঙালি জনগণ কখনোই ওই ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণকে মেনে নেয়নি। তারই ফলস্বরূপ ১৮৫৭ সালে জনতার অসন্তোষ সিপাহী বিদ্রোহের আকারে রূপনেয়। যদিও তা চূড়ান্ত সফলতা না পেলেও ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এটি সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান কোনদিন কেউ বাঙালিকে দাবিয়ে রাখতে পারে নি।
    শুরু হয় ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন। বাংলার বীর সন্তান তিতুমীর, টিপু সুলতান ও হাজী শরীয়তুললাহ প্রমুখের প্রতিরোধ সংগ্রাম।চট্টগ্রামের বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন,প্রীতিলতা ও প্রমুখের সশস্ত্র প্রতিবাদ।
                                                                             

                                                              
    মহাত্মা গান্ধী,লালা লাজপত রায়, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে,মঙ্গল পাণ্ডে, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ,লোহিয়া রাম মনোহর, রাম প্রাসাদ বিসমিল, রানী লক্ষ্মী বাই, রাশ বিহারি বোস, সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, শহীদ ভাগত সিংহ, শিবরাম রাজগুরু, মতিলাল নেহেরু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস ও প্রমুখের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন অত্যাচারী ঔপনিবেশিক ইংরেজ শাসকদের গদি নড়বড়ে করে দেয়। ভগ্নপ্রায় পতনোন্মুখ ইংরেজ শাসক ভারত ছাড়তে বাধ্য হয়। ভারত ছাড়ার সময়ে মহাম্মাদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তান নামের রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব দেয়। এখানে উল্লেখ্য যে,ওই সময়ে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার জন্য গঠিত হয় ভারতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ। এ দুটি দলের মাধ্যমে চলে রাজনৈতিক সমাধানের উদ্যোগ ও প্রয়াস। ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক পৃথকীকরণ কূটনীতিতে ভারত হল বিভাজিত।
                                                                

    ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ ভারত ভেঙে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামে দুটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করা হয়।আরও উল্লেখ্য যে, ১৯০৫ সালে ভাইসরয় লর্ড কার্জন তার দ্বিতীয় কার্যকালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বৃহত্তম প্রশাসনিক বিভাগ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিকে রাজনৈতিক ভাবে দ্বিখণ্ডিত করেন। এই বিভাজনের ফলে মুসলমান-প্রধান পূর্ববঙ্গ(বর্তমানে বাংলাদেশ ও আসাম প্রদেশ রাষ্ট্র, উত্তর পূর্বাঞ্চল ভারতের ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়ি বিভাগ) এবং হিন্দু-প্রধান বঙ্গপ্রদেশ(অধুনা পশ্চিমবঙ্গ,বর্ধমান বিভাগ, বিহার, ওড়িশা রাজ্য ও ঝাড়খণ্ড) গঠিত হয় ।

    মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পাকিস্তান গঠিত হয়। একটি দেশের দুটি  অংশ একটি পশ্চিম পাকিস্তান ও আর একটি পূর্ব পাকিস্তান। দূরত্ব ছিল প্রায় দেড় হাজার মাইলের মতো। এই অংশ দুটির মধ্যখানে অন্য একটি রাষ্ট্র ভারত।
    শুধু মাত্র ধর্মের কারণে বাঙালী অধ্যুষিত প্রায় ০০০ বর্গ মাইল বিশাল এলাকা পাকিস্তানের একটি অংশে পরিণত হল। দু খণ্ডের মানুষে-মানুষে  হাজার মাইলের দূরত্ব ছাড়াও ছিল সংস্কৃতি, ভাষা এমনকি আচার-আচরণে  ব্যাপক ব্যবধান। তবুও বাঙালি জনগণ আশা করেছিল এই স্বাধীন নতুন রাষ্ট্রে ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসকদের অত্যাচার, অনাচার, নির্যাতন বঞ্চনা শাসন শোষণ থেকে মুক্ত হবে। বাঙালীর প্রত্যাশিত আশা আকাঙ্খা পূরণ হবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে।কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালীরা আগের মতোই রয়ে গেল বঞ্চিত।এবং ধীরে ধীরে পশ্চিম পাকিস্তানের কলোনি হয়ে উঠলো। পরিবর্তন হলো না তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সামাজিক অবস্থার।

    পাকিস্তানের শাসকবর্গের বহুবাচনিক সমাজে পশ্চিম পাকিস্তানীয় একক সংস্কৃতিও ভাষা প্রতিষ্ঠার পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল।রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অংশগ্রহণের ক্ষেত্র সংকুচিত করা হলো পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকের দ্বারা। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালী জাতি শুধু রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বিভেদ বঞ্চনার, বৈষম্য, ষড়যন্ত্র, নির্যাতন ও শোষনের শিকার-ই হল না পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদে পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন করা হলো নিশ্চিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি অনুসন্ধান করলে দেখা যায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই শুরু হয় পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের বৈরিতা শোষণমূলক আচরণ।
                                                                                                                         চলবে। .......................
    সানজিদা রুমি কর্তৃক গ্রথিত http://www.alokrekha.com

    13 comments:

    1. রাত জেগেই লেখার অভ্যাস। লেখাটা আসছিল না ।তাই গগুল এ এটা ওটা দেখছি আর ভাবছি বেশ কিছুদিন আলকরেখায় নতুন কিছু নেই এত সুন্দর একটা বাংলা ওয়েব সাইট বন্ধ হয়ে গেল। খুলেতেই দেখি নতুন লেখা তাও আবার স্বাধীনতার ইতিহাস। অত্যন্ত নিপুন গবেষণা ও ইতিহাসের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ এই লেখায় বিদ্যমান। খুব ভাল লেগেছে ।কিছু দুর্লভ ছবি লেখাকে উত্কর্ষ দান করেছে।। আগামি পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।।অনেক শুভ কামনা

      ReplyDelete
    2. শেষ পর্যন্ত প্রতিশ্রুত লেখা পেলাম। আমারা যারা বিদেশে আছি তাদের জন্য এই ইতিহাস অনেক মুল্যবান। আমারা বই অতো পাইনা। আমার ইন্টারনেট এ সব সময় সব কিছ একত্রে পাওয়া জায় না। সাঞ্জিদা রুমি ও আলকরেখাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ

      ReplyDelete
    3. রুমি এমন একটা মহান উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অনেক সাহসের দরকার। তুমি তখন ছোট ছিলে কিই বা দেখেছো ? কিন্তু আমারা যারা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছি আমারাও সাহস করে লিখি না, খালিখালি গল্প বলি।তুমি যেভাবে বিস্তারিত ভাবে ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করেছ এতা একটা স্বাধীনতার দলিল হয়ে থাকবে। অনেক দোয়া। জয় বাংলা

      ReplyDelete
    4. এমন একটা মহান উদ্যোগ নেবার জন্য সানজিদা রুমি ও আলোকরেখাকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমরা জানি টুকরো টুকরো ইতিহাস। কিন্রু একসাথে এতো সুন্দর করে লেখা প্রশংসার দাবী রাখে। জয় বাঙলা

      ReplyDelete
    5. আপনার লেখা পরে শোনালাম। গভীর মনযোগ দিয়ে শুনলো। ওরা ব্রিটিশ নাগরিক ওদের কাছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনটা খুব ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে। এই জায়গাটা যদি আরো বিশদভাবে লেখা হলে ভালো হোত।তবুও এই মহান উদ্যোগ নেবার জন্য সানজিদা রুমি ও আলোকরেখাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।

      ReplyDelete
    6. আমার সকালটা এত ভাল হবে জানতাম না ,তোমার লেখাটা পড়ে এত ভাল লাগলো। আমার অনেক ইচ্ছে ছিল স্বাধীন বাংলা বেতারের সব কাহিনী লিখি।কিন্তু এই গুরুভার নিতে সাহসে কুলায়নি। তোমার এই সাহসের আমি সাধুবাদ জানাই !তুমি থেমো না

      ReplyDelete
    7. আমি একজন বীরাঙ্গনা হিসাবে আজ গর্বিত। একজন নারী এই প্রথম আমাদের ত্যাগ, আমাদের মুক্তি যুদ্ধের, আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস লিখছে। ধন্য হে নারী ! ধন্য তোমার মা!অনেক অনেক শুভাশিস

      ReplyDelete
    8. সত্যি এই লেখা পরে আমি অভিভূত। ইতিহাসের কঠিন ভাষা না। কত সহজ ও সাবলীল ইতিহাস বর্ণনা। ছোট বেলার বর্ণিল গল্পের বইয়ের গল্পগুলো আজো মনে গেঁথে আছে। আমি হলপ করে বলতে পারি এই স্বাধীনতার ইতিহাস ও এই প্রজন্মের বাচ্চাদের মনে গাঁথবে। অবোধ্য কঠিন ভাষায় লিখলেই সফল লেখা হয় না। অনেক দোয়া কলম যেন না থামে। এই স্বাধীনতার ইতিহাস বই আকারে দেখতে চাই দলিল হিসাবে।

      ReplyDelete
    9. এই প্রথম সাবলীল পরিছন্ন ভাষায় নতুন প্রজম্নের বাচ্চাদের জন্য তাদের বোধগম্য ভাষায় মুক্তি যুদ্ধের ও স্বাধীনতার ইতিহাস লিখছে এক নারী। সানজিদা তোমার জন্য অনেক শুভ কামনা। মোস্তফা নুরুল ইসলাম

      ReplyDelete
    10. আমি লেখিকা নয় একজন নারী হিসাবে গর্বিত। এক নারী তার আপন তুলিতে আঁকছে স্বাধীনতার ছবি। কি যে ভালো লিখেছো সানজিদা। অনেক ভালবাসা আর প্রার্থনা। আমিও এটা বই আকারে দেখতে চাই। আগামী লেখার অপেক্ষায় রইলাম।

      ReplyDelete
    11. অভিভূত এই লেখা পড়ে। কি যে ভালো লিখেছো সানজিদা।সাবলীল পরিছন্ন ভাষায় মুক্তি যুদ্ধের ও স্বাধীনতার ইতিহাস ব্যক্ত। আমিও এটা বই আকারে দেখতে চাই। আগামী লেখার অপেক্ষায় রইলাম। অনেক অনেক অভিনন্দন আর শুভ কামনা। শামীমা নাসরিন

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ