আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও " গায়ে হলুদ" ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    " গায়ে হলুদ"



    আজকাল বাঙালি মুসলিম বিয়েতে " গায়ে হলুদ" বাঙালি আচার অনুষ্ঠান নিয়ে বিরাট প্রশ্ন উদ্ভব হচ্ছে। বিশেষ করে "নব্য ধার্মিক " যারা তারা গায়ে হলুদ বাঙালি আচার অনুষ্ঠান বন্ধ করে তাদেরধর্মীয়চেতনা অনুভুতি রক্ষায় উঠে পড়ে লেগেছে ধর্মের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে "চরিত্র".যেমন বিভিন্ন রসায়নিক বস্তুর ধর্ম বিভিন্ন প্রকার। আমি মনে করিধর্মসম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যপার আরজাতিসমষ্টিগত ব্যপার। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করাটা ঔদ্ধত্য। ৭১'মুক্তি যুদ্ধের অন্যতম কারণ ছিল আমাদের শিল্প, সাহিত্য সংস্কৃতি রক্ষা। কিন্তু আজ আমরা আমাদের মুক্তিজুদ্ধের চিন্তা চেতনাকে হারাতে বসেছি এই নব্য ধার্মিকদের ভয়ে কিম্বা মগজ ধোলাইয়ের কারণে। পাকিস্তানিরা তখন বলত "ইসলাম খাতরে মে হ্যায় ইসকো বাচানেকে লিয়ে বাঙালি মারো" এখন নব্য ধার্মিকরা বলে ইসলাম ঝুকির মুখে বাঙলি তার শিল্প,সাহিত্য সংস্কৃতিকে ধ্বংস কর
    যদিও আমি ধর্মীয় আলোচনায় যাচ্ছিলাম না কিন্তু ভেতর আগুন জ্বলে যখন ভাবি সাড়ে সাত কোটি বাঙালি যুদ্ধ করেছে শুধু রাজাকাররা ছাড়া। ৩০ লক্ষ শহীদ আর লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময় আমাদের বাংলাদেশ ,বাঙালি জাতি ,বাঙালির শিল্প,সাহিত্য সংস্কৃতি। আজ এক শহীদ পরিবারের ছেলের বিয়েতে বাঙালি আচার অনুষ্ঠান গায়ে হলুদ নিয়ে বিরাট প্রশ্ন উদ্ভব হচ্ছে।এর চাইতে দুঃখের আর কি আছে ? সারা পৃথিবীতে বহু মুসলিম আছে তারা কিন্তু তাদের সংস্কৃতি পালন করে ,এমন কি "আরব দেশ" যাকে ইসলাম ধর্মের সুতিকা ঘর বলা হয় তারাও তাদের শিল্প সংস্কৃতি পালন করে। সেখানে তাদের ধর্মের সাথে সংস্কৃতির কোনো সংঘর্ষ নেই। এটা আমাদের উপমহাদেশে বিশেষ করে বাংলাদশে এই ধর্মের সাথে সংস্কৃতির সংঘর্ষ "নব্য ধার্মিকদের" কারণে প্রকট আকার ধারণ করছে।এই সামান্য লেখনীর মাধ্যমে যদি বাঙালি মন-মননের
     ও চেতনা জেগে উঠে, এই আমার প্রয়াস।




    সংস্কৃতি হচ্ছে জীবনের দর্পণ। সংস্কৃতি কৃষ্টি একটি জাতির শেকড়। আমরা বাঙালি হিসেবে গর্বিত বোধ করি।বাংলা ভাষা বাংলাদেশ নিয়েও আমাদের গর্বের শেষ নেই। আমরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি বিশ্ব ভাষা দিবস হিসেবে এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পেয়েছি আর রক্ষা করেছি হাজার বছরের বাংলা সাহিত্য ,সংস্কৃতি ,কৃষ্টি আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের ধারক বাহক বাঙালি।বাঙালির প্রাণের আবেগ ভালোবাসায় নবজাগরণ সৃষ্টি হয় সংস্কৃতির ক্ষেত্রে। বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য গ্রামীণ মেলা, পুতুলনাচ,যাত্রাপালা, জারি সারি, ভাটিয়ালি গান, দাঁড়িয়াবাঁধা, গোল্লাছুট, কানামাছি, হাডুডু, লাঠিখেলা তেমনি গায়ে হলুদ বাঙালি জাতির বহু প্রচলিত একটি উত্সব। বাঙালির এই প্রাচীন ঐতিয্য সংস্কৃতি সঙ্গে ধর্মের কোনো বিরোধ নেই অথবা পরিপন্থী নয়

    গায়ে হলুদের নিয়মটা মূলত পূর্ব বাংলার প্রায় হাজার বছরের পুরনো প্রথা। কেন গায়ে হলুদ করা হয় ? এই প্রথার মাধ্যমেই বিজ্ঞানমনস্কতার যথেষ্ট প্রমান পাওয়া যায় তখন যুগের মত প্রসাধন সামগ্রী বা প্রতিষ্ঠান ছিল না। তাই বিয়ের আগে বর কনের রূপচর্চার জন্যই মূলত এই গায়ে হলুদ অনুস্ঠানের প্রথার উদ্ভব। গায়ে হলুদে সবচেয়ে গুরত্ব্বপূর্ণ বিষয়টি হলো কাঁচা হলুদ ।কারণ হলুদ শুধু চামড়ার উজ্জ্বলতাই ফিরিয়ে আনে না , দূর করে চামড়ার বহু রোগ .সে যুগে যুগের মত ঔষধ-পত্র ছিলনা হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে।



    বিবাহের মাধ্যমে এক বাড়ির রোগ আর এক বাড়িতে যাতে সংক্রমিত হতে না পারে সেজন্যই বিবাহের সাতদিন আগে হলুদ মাখার কড়াকড়ি নিয়ম ছিল. পরে তা পরিবর্তিত হয়ে আচারসর্বস্ব অনুষ্ঠানে পরিনত হয়েছে ।গায়ে হলুদ বিয়ে সম্পর্কিত একটি আচার যেটি বর কনে উভয় পক্ষ দ্বারা পালিত হয়। বরপক্ষ বা কনেপক্ষের পক্ষ হতে অপরপক্ষের আয়োজিত অনুষ্ঠানে নানান উপহারসামগ্রী পাঠানো হয়ে থাকে এই অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে বর বা কনেকে একটি পাটির উপর বসানো হয়ে থাকে। ছোট থেকে বড় সবাই তার গালে বা হাতে হলুদ বাটা মাখিয়ে দেন।বর বা কনেকে নানা রকমের মিষ্টি ও পিঠা পুলি খাওয়ানো হয়।

    গায়ে হলুদে নানান উপকরণ যেমন কাঁচা হলুদ বাটা,হলুদের বাটি ,সোহাগপুরি চন্দ,সুগন্ধি তেল,আলতা,সোন্দা,মেহেদি,আপসান,হলুদেরপাটি, মাছডালা চিত্রিত ঢাকনা ও ঘট, মিষ্টির হাঁড়ি, মাছডালা পালকি  এবংহলুদের নানান উপকরণ ব্যবহার করা হয়।




    গায়ে হলুদ অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করে বাঙালি জাতিসত্তাকে নতুনভাবে জাগ্রত করে। গায়ে হলুদ কোনো ধর্মের আচার অনুষ্ঠান নয়, বরং স্নিগ্ধ সুন্দর জীবন রচনা করে এবং পরিবেশকে সচেতনভাবে আর সযত্নে নিজেকে সুন্দর করবার প্রয়াসী হয়।, সৃষ্টি করে এবং নিজের আচার-আচরণে, মনে-মননে, কথায়- কাজে অপরের পক্ষে স্মরণীয়, বরণীয়, অনুকরণীয়, অনুসরণীয় আকর্ষণীয় লাবণ্য ছড়িয়ে তৈরি করে দুটি পরিবারের নব বর বধুর মাঝে ভালবাসার ভিত


    সানজিদা রুমি কর্তৃক গ্রথিত http://www.alokrekha.com

    7 comments:

    1. আজকাল বাংলাদেশে বাঙালি মুসলিম বিয়েতে " গায়ে হলুদ" ও বাঙালি আচার অনুষ্ঠান নিয়ে বিরাট প্রশ্ন উদ্ভব হচ্ছে। যারা তারা গায়ে হলুদ ও বাঙালি আচার অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে । এই সময় সানজিদা রূমীর লেখাটা সময়ানুযায়ী ।অনেক ধন্যবাদ লেখককে।

      ReplyDelete
    2. বাংলাদেশে বাঙালি মুসলিম বিয়েতে " গায়ে হলুদ" কে হিন্দুয়ানী বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এখন বিদেশীয় সংস্কৃতি "মেহেদী" পালন করা হয়। বাংলা সংস্কৃতিকে রক্ষা ও পালন করা আমাদের দায়িত্ব। সানজিদা তোমাকে অনেক ধন্যবাদ এই বিষয়ে বিশদভাবে লেখার জন্য।

      ReplyDelete
    3. ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করাটা ঔদ্ধত্য। কিন্তু আমরা এই ঔদ্ধত্যতাকে আমরা শুধু মেনেই নিচ্ছি না বাঙালি সংস্কৃকে হিন্দুয়ানী বলে বর্জন করছি। এবং বিদেশী আমদানিকৃত সংস্কৃতি পালন করছি। সানজিদা রুমিকে সাধুবাদ জানাই এই নিয়ে বিস্তারিত লেখার জন্য।

      ReplyDelete
    4. খুব যৌক্তিক ও সময় উপোযোগী লেখা
      আমার খুব ভালোলেগেছে

      ReplyDelete
    5. আজ বহুদিন হল কবি সুনিকেত চৌধুরীর লেখা পাইনা কেন? উনি কি আর আলোকরেখায় লিখবেন না ? ওনার কবিতার বই কথাটা পাবো ? এই প্রশ্ন বহুবার আলোকরেখায় জানতে চেয়েছি অথচ আমরা কোন উত্তর পাইনি। এটা খুবই হতাশা ব্যঞ্জক। আলোকরেখার এই আচরণ আশা করা যায় না।

      ReplyDelete
    6. এই অপসংস্কৃতির যুগে আমাদের বাঙালি বিয়ে বিশেষ করে গায়ে হলুদ এখন হিন্দি সিরিয়াল। পোশাক আশাক সাজগোজ নাচ গান সবই ভাড়াটে হিন্দি সিরিয়াল সংস্কৃতি। এই সময় সানজিদা রুমি এই লেখাটা প্রযোজ্য ছিল। অনেক সাধুবাদ জানাই

      ReplyDelete
    7. এটা সম্পুর্ণ সামাজিক অনাচার।

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ