আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস




    শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সকল বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।

    ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাদের সাথে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাদের নির্যাতনের পর হত্যা করে। চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে থাকায় স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত হয়। পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গণকবরে তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর নিকট আত্মীয়রা মিরপুর রাজারবাগ বধ্যভূমিতে স্বজনের মৃতদেহ সনাক্ত করেন।অনেকের দেহে আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা, কারো কারো শরীরে একাধিক গুলি, অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে। যা থেকে হত্যার পূর্বে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিননিউজ উইক’-এর সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের লেখা থেকে জানা যায়, বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট হাজার ৭০ জন।

    ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারিশহীদ বুদ্ধিজীবী”-দের সংজ্ঞা চূড়ান্ত করা হয়। সংজ্ঞা অনুযায়ী,“১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত সময়কালে যেসব বাঙালি সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিক, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক সংগীতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং এর ফলে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ কিংবা ওই সময়ে চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবী।

     বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিতশহিদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ’ (১৯৯৪) থেকে জানা যায়, ২৩২ জন বুদ্ধিজীবী নিহত হয়েছেন। তবে তালিকায় অসম্পূর্ণতার কথাও একই গ্রন্থে স্বীকার করা হয়। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের ১৮, মতান্তরে ২৯ তারিখে বেসরকারীভাবে গঠিত বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। এরপরবুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটিগঠিত হয়। এই কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, রাও ফরমান আলী এদেশের ২০,০০০ বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এই পরিকল্পনা মতো হত্যাযজ্ঞ চলেনি। কারণ ফরমান আলীর লক্ষ্য ছিল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদেরকে গভর্নর হাউজে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা। বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান বলেছিলেন, ‘এরা নির্ভুলভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনষ্ক বুদ্ধিজীবীদেরকে বাছাই করে আঘাত হেনেছে

    তাজউদ্দিন আহমেদ একটি তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেন ১৯৭১ সালের ৩১শে ডিসেম্বর। কিন্ত, তার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। ১৯৭১ সালের ২৭ ডিসেম্বর দৈনিক আজাদের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনাটি পূর্বেই করা হয় আর এতে সহায়তা করে জামায়াতে ইসলামী এর ছাত্র সংগঠন ছাত্রসংঘ। হত্যাকাণ্ডে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন ব্রি. জে. আসলাম, ক্যাপ্টেন তারেক, কর্ণেল তাজ, কর্ণেল তাহের, ভিসি প্রফেসর ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন, ডঃ মোহর আলী, আল বদরের এবিএম খালেক মজুমদার, আশরাফুজ্জামান খান চৌধুরী মাইনুদ্দিন এদের নেতৃত্ব দেয় মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।

    ১৯৯৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় রমনা থানায় প্রথম মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর ১৫) সেখানে আলবদর বাহিনীর চৌধুরী মাইনুদ্দীন আশরাফুজ্জামানকে আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিনের বোন ফরিদা বানু।

    ১৯৭১ সালে বছরব্যাপী পাকিস্তান সেনাবাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। পরিকল্পিতভাবে ১৪ ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশীসংখ্যক বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এই দিনকেশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসঘোষণা করেন।

    ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। স্মৃতিসৌধটির স্থপতি মোস্তফা হালি কুদ্দুস। ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়েরবাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ শুরু হয় যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর নকশা করেন জামী-আল সাফী ফরিদউদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশ ডাকবিভাগ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে একটি স্মারক ডাকটিকিটের সিরিজ প্রকাশ করেছে।

    আজ এই দিনে সকল শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আলোকরেখা শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছে।

    সানজিদা রুমি কর্তৃক গ্রথিত http://www.alokrekha.com

    3 comments:

    1. মেহরান সিদ্দিকীDecember 14, 2022 at 7:50 PM

      শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে আলোকরেখা স্মরণ করছে দেখে খুব ভালো লাগছে। খুব তথ্য বহুল লেখা যা প্রশংসার দাবীদার।

      ReplyDelete
    2. মিতা কাদেরDecember 14, 2022 at 7:58 PM

      আলোকরেখা আমাদের ভালো লাগে কারণ এখানে প্রজ্ঞা ও মননের বিকাশ ঘটে। শুধু কবিতা ও সাহিত্যই নয় সমাজের ,দেশের বিদেশের সকল কিছুই প্রকাশিত হয়। আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে আলোকরেখা স্মরণ করছে এটা তারই প্রমান। আলোকরেখার জন্য অনেক শুভ কামনা।

      ReplyDelete
    3. শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে আলোকরেখা স্মরণ করছে এটা খুবই ভাল প্রয়াস। আলোকরেখার জন্য অনেক শুভ কামনা।

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ