আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও ইরাবতী আর মোহন কথা............. সুলতানা শিরীন সাজি ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    ইরাবতী আর মোহন কথা............. সুলতানা শিরীন সাজি

    ইরাবতী আর মোহন কথা
    সুলতানা শিরীন সাজি

    বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের সেই আমাকে তুমি চিনতে যখন,আমি তখন পুরাতন টেন এর ছাত্রী।তুমি নতুন টেন।কালিশংকর গুহ রোডের অংকের মাস্টারমশাই এর বাড়িতে দেখা হতো।আমি যখন ইলেকটিভ ম্যাথ এর জটিল অংক নিয়ে ঘামছি!
    তুমি অনায়াসেই সেটা সলভ করে কাগজটা বাড়িয়ে দিতে।
    যতই বারণ করছি,ততই পিছু পিছু বাড়ি ফিরছো।
    সাইকেলের টুংটাং এ সচকিত হতো বিকালের ছায়াপথ!
    ব্রহ্মপুত্রের ধারে একবার বন্ধুদের সাথে।সেখানে পৌঁছে গেছিলে। 
    কথাহীন একটা সম্পর্কের তুমুল মায়ায় ঢুকে পড়েছিলাম।কেমন করে প্রায়ই আমাদের দেখা হয়ে যেতো।মফস্বল শহরের রাস্তাঘাট, নদীর পার,খেলার মাঠে তখন টুপটাপ দেখা হওয়া সময়।
    একবার বৃষ্টিতে হেঁটেছিলাম আকুয়ার মোড় থেকে ব্রহ্মপুত্রের ধার পর্যন্ত।
    এস এস সির পর আমি ঢাকায়। তুমি আনন্দমোহনেই।
    মাঝেমাঝে চিঠি পেতাম।চিঠিগুলো আসতো বইয়ের মলাটে বন্দী হয়ে। চিঠি জুড়ে থাকতো নতুন পড়া গল্পের গল্প।বিমল মিত্রের ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম” পড়বার পর ১৭ পাতা চিঠি লিখেছিলে ।বইটা পড়ার পর সেই ১৭ পাতার চিঠিটাকে আমার প্রতিদিনের অপরিহার্য পাঠের মধ্যে রেখেছিলাম !  
    চিঠি আমিও লিখতাম।লিখতাম ঢাকা শহরের গল্প।নীলক্ষেতের পুরাতন বইয়ের দোকান থেকে খুঁজে তোমার জন্য কার্ল মার্কস এর বই,চে গুয়েভারার পোস্টার পাঠাতাম। বন্ধুদের সাথে তখন  শহরেরে কোথায় শিমুল,পলাশ গাছ, তা খুঁজে বেড়াতাম। আর তোমাকে সেই গল্প লিখতাম!
    শামসুন নাহার হলের সামনে মামুর চায়ের দোকানের চা খাইয়েছিলাম তোমাকে প্রথমবার দেখা হবার পর।তুমি তখন আনন্দমোহনেই।ফিজিক্স!
    রাজনীতিতে মেতে আছো ভীষণ।
    রক্তের ভিতর তোমার টগবগ করছে বাবরি চুলের নজরুল।
    দেশটাকে নিয়ে বিশাল চিন্তা ভাবনায় ডুবে আছো। 
    চিঠি কমছে।সাতটা চিঠির উত্তরে একটা আসছে কখনো। কখনো আসছেই না! ব্যস্ততম মানুষ হয়ে উঠেছিলে তুমি।
    মিছিল,মিটিং,শ্লোগান এ ডুবে অন্য তুমি!
    একদিন দেখা হলো আবার।জেল খেঁটে বিশাল নেতা হয়েছো।দলও পালটেছো।
    আমাকে জীবন নিয়ে অনেক কথা বললে। একটা নকশা আঁকা কাঠের বাক্স ভরে আমার লেখা চিঠিগুলো দিয়ে গেলে!
    শেষ চিঠিটার কয়েকটা লাইন মনে পড়ে,
    লিখেছিলে,” জীবনের অংক সবার জন্য সরল হয়না।
    একটা জীবন আমাদের হতে পারতো,খুব সাদামাটা গল্পের মতন! হলো না।
    আমাদের দুজনের চিঠি দিয়ে একটা বই ছাপানোর ইচ্ছে ছিল।তাই চিঠিগুলো তোমাকে দিয়ে গেলাম ।পারলে ছাপিও।
    আর হ্যা,রাজনীতি করতে যেয়ে একজনের সাথে দেখা হয়েছে।
    তার সাথেই জীবনের সা,রে,গা,মা,পা,ধা,নি,সা।”
    প্রত্যাখাত হওয়া কি একে বলে? ভীষণ অভিমানে চিঠির বাক্সটা হলের লকারের উপরে খালি জায়গায় রেখে চলে এসেছিলাম।
    ওটাতে দুজনের লেখা চিঠিগুলো রেখেছিলাম একটা নোট সহ।
    “দুজন মানব মানবী জীবনের  ৬ বছর তুমুল ভালোবাসায় চিঠিগুলো লিখেছিল।
    একদিন সেই ভালোবাসাকে ছাপিয়ে গেছিলো অন্যরকম ভালোবাসা! আর তাই ওদের নির্বাসিত জীবন। 
    এই চিঠিগুলো শুধু চিঠি তো নয়,হৃদয়ের ভীষণ কাঁপন”।
    শেষকথাঃ
    জীবনে কত অদ্ভুত ঘটনা ঘটে।
    বিশ বছর পর,এই চিঠির বাক্স খুঁজে পায় ইংরেজী সাহিত্যে পড়া এক ছাত্রী।
    সে ২৩৩টা চিঠি পড়ে এবং পাত্র পাত্রীকে খুঁজে বের করে। একজন ময়মনসিংহে একাই থাকেন।এখনো রাজনীতিতেই ডুবে আছেন।
    অন্যজন ইতালীর এক গ্রামে থাকে।তার ইমেইল জোগাড় করে চিঠি পাঠায় ও।
    আর সংযুক্ত করে একটা একা মানুষের ছবি। যে ,তার জীবন থেকে সরে গিয়েছিল এক কাল্পনিক গল্প বলে।সেই মানুষের বইয়ের শেলফ জুড়ে দুজনের ভালোলাগা বই।
    দেয়ালে ব্রহ্মপুত্রের পারে বৃষ্টিতে ভেজা দুটো মানুষের ছবি।
    ওদের আবার দেখা হয়।
    ভালোবাসায় কত কী যে সম্ভব !
    শুধুমাত্র বেঁচে থাকলেই কত কী যে হয়!

    http://www.alokrekha.com

    3 comments:

    1. মিতালি মুখার্জিMarch 16, 2023 at 7:08 PM

      লেখক সুলতানা শিরীন সাজির "ইরাবতী আর মোহন কথা" পড়ে খুব ভালো লাগলো।তাদের জীবন কথা হৃদয় স্পর্শী। আলোকরেখায় নতুন লেখা পেয়ে খুব আনন্দিত হলাম। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

      ReplyDelete
    2. রায়হান সোবহানMarch 16, 2023 at 7:19 PM

      লেখক সুলতানা শিরীন সাজির "ইরাবতী আর মোহন কথা" হৃদয়গ্রাহী একটা লেখা। লেখক তার লেখনীতে দুজনার প্রেম কাহিনী যেভাবে তা নন্দিত। একজনের চলে যাওয়া বড় বেদনাদায়ক দারুন অভিব্যক্তির প্রকাশ। অনেক অনেক শুভকামনা।

      ReplyDelete
    3. মিতা রহমানMarch 16, 2023 at 7:55 PM

      লেখক সুলতানা শিরীন সাজির "ইরাবতী আর মোহন কথা" হৃদয়গ্রাহী লেখনী। ভালোবাসায় কত কী যে সম্ভব !শুধুমাত্র বেঁচে থাকলেই কত কী যে হয়! কথাটা আমরা অনুভব করি কিন্তু প্রকাশের ভাষা জানা নেই। লেখক তার কলমের তুলি দিয়ে মনোরম ভাবে এঁকেছেন। তাকে অনেক অনেক ভালোবাসা।

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ