অভিযাত্রিক
।।।।।।।।অনার্য অধীর
পান্না,
মনে কি পড়ে
সেই কলেজের পুকুর ধারের নারিকেল গাছের
সারিবদ্ধ বিকেলের কথা?
ঠাঁই দাঁড়িয়েছিলাম আমরা
একটা কথাও নেই
টু শব্দটিও নেই
চুপচাপ দীর্ঘশ্বাস কাটার প্রহর
কথা বলে আর কত কথা বলা যায়
নিঃশব্দেই রবং সেদিন সব বলা হলো
তুমি ঘাড় নাড়িয়ে বেণী দুলিয়ে দুলিয়ে
ভালোবাসা ইতিহাসের পাতায় চুম্বন খেয়ে গেল
আমাদের ওষ্ঠজোড়ে
আমরা হৃদয় দোলনায় দোল খেতে খেতে
চারানবিল পাড় হয়ে গেলাম
গুদারাওয়ালা কিছুই বুঝলো না
শুধু স্বাক্ষী হয়ে রইলো খেয়াঘাটের নৌকা
কত অবলীলায়ই আমরা আমাদের
আবিষ্কার করলাম নতুন পথের সীমানা
তারপর চলে গেল কত বসন্ত,হেমন্ত,
পৌষ সংক্রান্তি
আর আমাদের জীবনে নেমে এলো
অশ্লেষার রাক্ষুসী বেলা
কালরোগে কুরে কুরে খেতে থাকলো আমাদের
কিন্তু পারলো না আমাদের প্রেমের প্রদীপ নেভাতে
তাই আমরা এখনো দুর্দিনের যাত্রী
আলো হাতে চলিয়াছি আঁধারের রাত্রি।
http://www.alokrekha.com




লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে 







অভিযাত্রিক কবি অনার্য অধীররের অসাধারণ এক কবিতা — গভীর নস্টালজিয়া, মায়া আর সময়ের ক্ষয়ে যাওয়া প্রেমের অনন্ত সুরে ভরা। “অভিযাত্রিক” কবিতায় সময়ের প্রবাহটা দারুণভাবে ধরা পড়েছে —প্রথম ভাগে যে স্মৃতি, সেটি কোমল, তরুণ, প্রেমে ভরা;আর শেষভাগে আসে জীবনের অনিবার্য ক্ষয়, কিন্তু সেখানে প্রেমের অমরত্বও আছে। খুব ভাল লাগলো ।শুভেচ্ছা কবি ।
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীরের অভিযাত্রিক কবিতাটা খুব ভালো লাগলো । আলোকরেখা আমার খুব প্রিয় ।আমি এর নিয়মিত পাঠক ।প্রতিদিন কয়েকবার এখানে আসি নুতুন কিছু না পেয়ে আশাহত হই ।অগত্যা পুরনো লেখাই পড়ি ।আজ নতুন কবিতা সম্ভবত নতুন কবির সংযোজনা । কবিতাটি অনবদ্য । অনেক শুভেচ্ছা জানবেন কবি ।
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীরের অভিযাত্রিক কবিতাটা স্মৃতিনির্ভর রোমান্টিসিজম নিয়ে রচিত ।খুব ভালো লাগলো । কবিতার সূচনাতেই স্মৃতির আবেশ প্রবল — “সেই কলেজের পুকুর ধারের নারিকেল গাছের সারিবদ্ধ বিকেল” এই চিত্রকল্প পাঠককে অবলীলায় ফিরিয়ে নিয়ে যায় এক নরম, নস্টালজিক সময়ের ভেতর। কবি অতীতের প্রেমকে মনে করে, কিন্তু স্মৃতিটিকে শুধু মনে রাখেন না, সেটিকে পুনর্জীবিত করেন। দারুন কবি ।ভাল থাকবেন ।
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীরের অভিযাত্রিক কবিতাটা অনন্য সুন্দর। সরবে নীরবতার ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে বলে আমার ধারনা ।“একটা কথাও নেই, টু শব্দটিও নেই” — এই পংক্তিগুলো নীরবতাকে অর্থপূর্ণ করে তোলে। এখানে নীরবতাই হয়ে ওঠে যোগাযোগের মাধ্যম। কবির এই নীরব সংলাপ মানব-সম্পর্কের গভীরতা ও বোধ্যতার দিকটি ফুটিয়ে তোলে।চিত্রকল্পের মাধুর্য অনবদ্য । কবিতায় চিত্রকল্পের ব্যবহার মনোহর — নারিকেল গাছ, পুকুর ধারে বিকেল, খেয়াঘাটের নৌকা, বেণী দোলানো — সবকিছু মিলে এক জীবন্ত দৃশ্য গড়ে তোলে, যেন পাঠকও সেই বিকেলের বাতাসে দাঁড়িয়ে আছে। ধন্যবাদ আলকরেখাকে !
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীরের অভিযাত্রিক কবিতাটা খুব সুন্দর। এখানে প্রেমের চিরন্তনতা কবিতাকে অনন্য রুপ দান করেছে ।“কালরোগে কুরে কুরে খেতে থাকলো আমাদের, কিন্তু পারলো না আমাদের প্রেমের প্রদীপ নেভাতে”— এই পংক্তিতে কবি দেখিয়েছেন যে সময় ও দুর্দশা প্রেমকে আঘাত করতে পারে, কিন্তু নিভিয়ে দিতে পারে না। এখানে প্রেম শুধু অনুভূতি নয়, এক আত্মিক শক্তি। সময় ও পরিবর্তনের প্রতীকী ব্যবহারও অনবদ্য । বসন্ত, হেমন্ত, পৌষ সংক্রান্তি — এসব ঋতুর নাম কেবল সময় নয়, জীবনের পর্যায়গুলোর প্রতীক। এগুলোর মাধ্যমে কবি দেখিয়েছেন প্রেমের বিবর্তন ও জীবনের অনিবার্য রূপান্তর। সব মিলিয়ে সুখ পাঠ্য । অনেক শুভ কামনা ।
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীরের অভিযাত্রিক কবিতাটা খুব সুন্দর। পড়ে খুব ভাল লাগলো। শব্দচয়ন ও ছন্দের সুর কবিতার ভাষা সহজ, কিন্তু কাব্যিক ও মর্মস্পর্শী। গদ্যছন্দের ভেতরেও এক অনুচ্চারিত ছন্দ রয়েছে। প্রতিটি পংক্তির দৈর্ঘ্য ও বিরাম যেন অনুভূতির তীব্রতা মেপে নেওয়া। শেষ পংক্তি — “তাই আমরা এখনো দুর্দিনের যাত্রী, আলো হাতে চলিয়াছি আঁধারের রাত্রি”— এখানে ‘অভিযাত্রিক’ শব্দটির মর্ম স্পষ্ট। প্রেমিক-প্রেমিকা এখানে জীবনের দুর্দিনেও আলোর সন্ধানী, তারা সময়ের অন্ধকার পেরিয়ে চলেছে অনন্ত অভিযানে। এ এক অস্তিত্ববাদী ভালোবাসার প্রতীক। অনেক শুভ কামনা ।
ReplyDeleteআলোকরেখায় নুতুন লেখা পেলে খুবই আনন্দিত হই । কবি অনার্য অধীরের অভিযাত্রিক কবিতাটা খুব সুন্দর। পড়ে খুব ভাল লাগলো। পুরো কবিতাটিই এক রূপান্তরের যাত্রা — নস্টালজিয়া থেকে বাস্তব, বাস্তব থেকে আত্মিকতায়। শুরুতে প্রেম শিশুর মতো কোমল, মাঝখানে তা সময়ের পরীক্ষায় ক্লান্ত, আর শেষে সে রূপ নেয় জ্ঞানপ্রাপ্ত আত্মার মতো। এই ধীরে ধীরে পরিণতি কবির দৃষ্টিতে প্রেমকে কেবল রোমান্টিক অনুভব নয়, বরং এক আধ্যাত্মিক অভিযাত্রা হিসেবে প্রতিপন্ন করেছে। কবিতার নাম “অভিযাত্রিক” তাই একদম যথার্থ — প্রেম, জীবন ও সময় — তিনেরই সমান্তরাল যাত্রা এখানে মিলেমিশে গেছে। অনেক শুভ কামনা ।
ReplyDelete