আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও জীবনানন্দ দাশ ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    জীবনানন্দ দাশ




    জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তের জেলা শহরবরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণা নিবাসী। তাঁর পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত (১৯৩৮-৮৫বিক্রমপুরথেঁকে স্থানান্তরিত হয়ে বরিশালে আবাস গাড়েন সর্বানন্দ জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলেনপরে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন। তিনি বরিশালে ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের  অংশগ্রহণ করেন ।জীবনানন্দের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্তের সর্বাসন্দের দ্বিতীয় পুত্র। সত্যানন্দ দাশগুপ্ত (১৮৬৩-১৯৪২ছিলেন বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষকপ্রাবন্ধিকবরিশাল ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক এবং ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক। 
    জীবনানন্দের মাতা কুসুমকুমারী দাশ ছিলেন কবি, তার সুপরিচিত কবিতা আদর্শ ছেলে (আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/ কথায় না বড় হয়ে কাজে বড়ো হবে) আজও শিশুশ্রেণীর পাঠ্য। জীবনানন্দ ছিলেন পিতামাতার জ্যেষ্ঠ সন্তান। ভোরে ঘুম থেকে উঠেই পিতার কণ্ঠে উপনিষদ আবৃত্তি মায়ের গান শুনতেন। লাজুক স্বভাবের হলেও তার খেলাধুলা, ভ্রমণ সাঁতারের অভ্যাস ছিল।
    ১৯০৮ সালের জানুয়ারিতে আট বছরের মিলুকে ব্রজমোহন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়ইস্কুলে থাকাকালীন সময়েই তার বাংলা ইংরেজিতে রচনার সূচনা হয়, এছাড়াও ছবি আঁকার দিকেওতার ঝোঁক ছিল।
         ১৯১৫ সালে তিনি ব্রজমোহন বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগ সহ ম্যাট্রিকুলেশনপাশ করেনদু'বছর পর ব্রজমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতা  বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার   উদ্দেশ্যে   বরিশাল   ত্যাগ   করেন। জীবনানন্দের সাহিত্যিক জীবন বিকশিত হতে শুরু করে। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ মৃত্যুবরণ করলে জীবনানন্দ তার স্মরণে ‘দেশবন্ধুর প্রয়াণে’ নামক একটি কবিতা রচনা করেনযা "বঙ্গবাণী" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কবিতাটি পরবর্তীতে তার প্রথম কাব্য সংকলন "ঝরা পালকে" স্থান করে নেয়। ধীরে ধীরে কলকাতা, ঢাকা এবং অন্যান্য জায়গার বিভিন্ন সাহিত্যপত্রিকায় তার লেখা ছাপা হতে থাকে; যার মধ্যে রয়েছে সে সময়কার সুবিখ্যাত পত্রিকা কল্লোলকালি কলমপ্রগতি প্রভৃতি। কলকাতার সাহিত্যচক্রেও সে সময় তার কবিতা কঠিন সমালোচনার মুখোমুখি হয়। সে সময়কার প্রখ্যাত সাহিত্য সমালোচক সজনীকান্ত দাশ শনিবারের চিঠি পত্রিকায় তার রচনার নির্দয় সমালোচনায় প্রবৃত্ত হন। কলকাতায় করবার মতোন কোন কাজ ছিল না বিধায় কবি ছোট্ট শহর বাগেরহাটের প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তবে তিন মাস পরেই তিনি কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন। সময় তিনি চরম অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়েছিলেন। জীবনধারণের জন্যে তিনি টিউশানি করাতেন এবং সাথে সাথে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরির সন্ধান করছিলেন। ১৯২৯ সালের ডিসেম্বরে তিনি দিল্লির রামযশ কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। বরিশালে তার পরিবার তার বিয়ের আয়োজন করছিল এবং ১৯৩০ সালের ৯ই মে তারিখে তিনি লাবণ্য দেবীর সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ে হয়েছিলো ঢাকায়, ব্রাহ্ম সমাজের রামমোহন লাইব্রেরিতে।বিয়ের পর আর দিল্লিতে ফিরে যাননি তিনি, ফলে সেখানকার চাকরিটি খোয়ান। এরপর প্রায় বছর পাঁচেক সময় জীবনানন্দ কর্মহীন অবস্থায় ছিলেন। মাঝে কিছু দিন ইনশিওরেন্স কোম্পানির এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন, ছোট ভাই এর কাছ থেকে অর্থ ধার করে ব্যবসার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনটাই স্থায়ী হয়নি।
    ১৯৩১ সালে " ক্যাম্পে" কবিতাটি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত সম্পাদিত "পরিচয়" পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং সাথে সাথে তা কলকাতার সাহিত্যসমাজে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়। কবিতাটির আপাত বিষয়বস্তু ছিল জোছনা রাতে হরিণ শিকার। অনেকেই এই কবিতাটি পাঠ করে তা অশ্লীল হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি তার বেকারত্ব, সংগ্রাম হতাশার এই সময়কালে বেশ কিছু ছোটগল্প উপন্যাস  রচনা করেছিলেন, তবে তার জীবদ্দশায় সেগুলো প্রকাশিত হয়নি। ১৯৩৪ সালে তিনি একগুচ্ছ  কবিতা রচনা  করেন যা পরবর্তীতে তার রূপসী বাংলা কাব্যের প্রধান অংশ নির্মাণ করে।জীবনানন্দ কবিতাগুলো প্রকাশ করেননি এবং তার মৃত্যুর পর কবিতাগুলো একত্র করে ।               ১৯৫৭ সালে "রূপসী বাংলা"  কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।                                                                          

    ১৪ই অক্টোবর, ১৯৫৪ তারিখে কলকাতার বালিগঞ্জে এক ট্রাম দুর্ঘটনায় তিনি আহত হন।  তাঁকে ভর্তি করা হয় শম্ভূনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। জীবনানন্দের  সুচিকিৎসার জন প্রাণপণ চেষ্টা করা হয়েছিল ।     কবি-সাহিত্যিক সজনীকান্ত দাশ  ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁর অনুরোধেই পশ্চিম বঙ্গের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় কবিকে দেখতে এসেছিলেন এবং আহত কবির সুচিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছিলেন যদিও এতে চিকিৎসার তেমন উন্নতি কিছু হয় নি। জীবনানন্দের অবস্থা ক্রমশঃ জটিল হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন কবি। চিকিৎসক সেবিকাদের সকল    প্রচেষ্টা বিফলে দিয়ে ২২শে অক্টোবর, ১৯৫৪ তারিখে রাত্রি ১১ টা ৩৫ মিনিটে কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

    0 comments:

    Post a Comment

    অনেক অনেক ধন্যবাদ