অবশেষে
জেনেছি মানুষ একা !
ঋতু মীর
‘Isolation is a way to know
ourselves’
আমার স্বভাবে দুই বৈপরীত্য বেশ প্রকট। একদিকে আমি আপাদমস্তক সামাজিক। মানুষের ভিড়ে আমার আনন্দ, উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। কোন কিছুর ‘সাতে পাঁচে’ নেই এমনটা
আমার সহজে মিশে যাওয়া স্বভাবের সাথে একেবারেই খাপ খায়না। বিপরীতে আমি বাড়াবাড়ি ধরনের ঘরকুনো, অন্তর্মুখী এবং নিভৃতচারী। কাজের স্বার্থে বাইরে যাওয়া ছাড়া বাকী সময় ঘরে প্রায় ‘বিছিন্ন’ থাকাতেই যেন আমার যত সুখ, যত স্বস্তি। নিজের চারদিকে এক অদৃশ্য বলয় তৈরি
করে আমি যেন আত্মরক্ষার নিপুণ কৌশলে ‘নিজেকে নিয়েই’ ভাল থাকার এক অবিমিশ্র সুখে
বেঁচে থাকি। স্কুলে মার্চ ব্রেক সহ ‘করোনা’ ভাইরাসের সতর্কতা জনিত দুই সপ্তাহের উপরি ছুটির
ঘোষণায় মন মেজাজ হাল্কা, ফুরফুরে। ছুটির প্রথম সকালেই আরামের চেয়ারে
স্ট্রেস ফ্রী এক আয়েশি ভাব। সন্ধানী চোখ জানালার বাইরে অবাক বিস্ময়ে ছুটোছুটি করে।
গাছে নতুন পাতায় নতুন প্রানের ছন্দ। মুঠো মুঠো সোনালী রোদে প্রকৃতি বসন্তকে ধারণ
করছে ধীরে । হাতের কাছে হরিশংকর জলদাস-কয়েকদিন ধরে তাঁকেই পড়ছি। ‘দহনকাল’ ‘কৈবর্ত কথা’, ‘রামগোলাম’ এর জেলে, মেথর জীবনের চালচিত্র,
রুপ, রস, গন্ধ মাখা, অবিস্মরনীয় সব উপন্যাস! প্রায় উড়ে উড়েই চলে যায় কয়েকটা দিন। আহা! কি ভীষণ নির্ভার আর আরামদায়ক বিচ্ছিন্ন এই সময়। ভাবি, ‘বিছিন্নতা’ বলে হয়তো কিছু নেই। জগতের দৃশ্যমান সবকিছুর সাথেই আমরা এক
অদৃশ্য শৃঙ্খলে বাঁধা । সব কিছুর সাথেই ভীষণভাবে যুক্ত এবং অবিছিন্ন।
১।
‘করোনা’ ভাইরাসের স্বাস্থ্য ঝুঁকি, Self Isolation-সতর্কবাণীতে আতঙ্কের বদলে কেমন এক নির্লিপ্ত
ভাব আমার। অথচ ডাক্তার, অসু্খ, মৃত্যু, শরীর-স্বাস্থ্য এইসব নিয়ে দুশ্চিন্তা যে আমার অস্থিতে, মজ্জায়
তা জগতের কে আর না জানে! Isolation- সেতো আমার সর্বকালের স্বেচ্ছা
প্রণোদিত নির্বাসন আর স্বাস্থ্য সচেতনতা আমার যাপিত জীবনের প্রথম প্রায়োরিটি। স্বাস্থ্য বিষয়ে আমার ‘কম্প্রোমাইজ’ একেবারে শুন্য। বাইরের খাবারে রসনা তৃপ্ত করার স্বাস্থ্য ধ্বংসকারী অভ্যাস
আমার নেই বললেই চলে। বসবাসের জায়গা নিয়মিত পরিচ্ছন্ন,
গোছানো, পরিপাটী রাখা আমার ‘প্যাসন’। খাটের নিচের লুকানো ময়লাই
যে আমাকে পীড়া দেয় বেশি! সর্বোপরি নিয়মবদ্ধ জীবন যাপনে অভ্যস্ত
আমি মায়ের মতই- এক মহা সংসারী! কেউ কেউ আবার সুযোগ বুঝে মনের গোপন কষ্টের জায়গাতে
কথার কুঠার ঠুকে – এমন ছিমছাম! আসলে মানুষতো মোটে দু’জন, সবই সম্ভব। মন খুলেই হাসি। যা শুনলে অন্যপক্ষের আত্মপ্রসাদ হতে পারে তাই বলি- আসলে নষ্ট করার মত কেউ নেই তো!! তাই আদিকাল ধরে যেমন রাখি তেমনি থাকে- সাজাতে, গোছাতে, পরিস্কার করতে হয় না মোটেই ! মনে পড়ে সেই কথোপকথন - আপনি তো মহা সুখী, ঝাড়া হাত পা,
চিন্তা, ভাবনা নাই! জানেন! রাতে ঘুমাইতে পারিনা একটুও ! সঙ্কোচেই জানতে চাই- ঘুম
হয় না কেন? ভালো কাজ করেন, পুত্র, কন্যা নিয়ে ছোট্ট সুখের সংসার! তাহলে! বইলেন না আর ! দেশে পঁচিশতলা কমপ্লেক্সের ভিত্তি শুরু, এইখানে দুইটা দোকান আর বাড়ীর মর্টগেজ দেয়া। বুঝেনই তো! সব ধরেন গিয়া ছেলেমেয়েরই জন্য! ভিতরে এক আত্মপ্রসাদ হয় এবার – অন্ততঃ ঘুম হরণের মত নির্বুদ্ধিতার রাস্তায় হাঁটিনা বলে ! মাঝে মাঝে ‘ফিগার’ নিয়েও মহা বিড়ম্বনার মুখোমুখি –
হুম! ছেলেপিলে না হলে অবশ্য এমন ধরে রাখা সম্ভব। বিব্রত মুখে পাশ কাটাই। খাদ্যগ্রহনে
পরিমিতিবোধ স্বাস্থ্যসম্মত তো বটেই, তাছাড়া বাঁকই যে দেহের কমনীয়
সৌন্দর্য! ছেলেপিলে হলেই কি আর আয়েশি, বেঢপ মেদ এই শরীরে জমা
হতে দিতাম? কক্ষনোই না! কখনো আবার-টাকা দিয়ে করবে কি- দু’জনতো মোটে মানুষ ! তাইতো! সত্য কথন! নিপাট, নিভাঁজ সত্যি! এবারও হাসি, মুক্তমনেই। খরচ নেই মোটেই! দশমিকের পরে বেতনের খুচরা কয়টা পয়সাই শুধু যা খরচ, বাকী সব জমে জমে পাহাড়। কেউ আবার টিপ্পনী কাটে – আরে ! দুইজন মিলে একটু ঘুরে, উড়ে বেড়ালেও তো হয়, কি
আর চিন্তা! টাকা না দাম্পত্য সম্পর্কের
রসায়ন- ঠিক কোনটা পরিমাপে এই উৎসাহের আতিশয্য তা বোঝার বৃথা চেষ্টা করিনা। কষ্টের নিঃশ্বাস চেপে রাখি- বলিনা যে, মহাসাগরের গভীর নীল চোখে মেখে নীলগিরি পাহাড় চুড়ায় ঘুরতে নয়, মন সত্যিই পড়ে
থাকে দেশে, যাই প্রতিবছর, দু’জনেই ! অসুস্থ, শয্যাশায়ী মা, বাবা আর ভাইবোন পথ চেয়ে বসে থাকে- দু’জনেরই! বলিনা যে, মায়ের চিকিৎসার ব্যয়বহুল খরচ, প্লেন ভাড়া, মায়ের জন্য ঔষধ সহ যাবতীয় প্রয়োজনের জিনিষ কিনতে উজাড় হাতে খরচ করবো বলে আমার ঝাঁপি ভরা টাকার দরকার । মা আর নেই এখন। প্রতিবার বিদায়ের
কষ্টে ছিঁড়ে খুঁড়ে যাওয়া দগদগে লাল ক্ষত সময়ে মা’কে বলা উচ্চারিত অঙ্গীকার মনে করে চোখ ভিজে আসে নিভৃতে। একা মায়ের
ছবির সামনে বিড়বিড় করি- এইতো স্কুল ছুটি হলেই আসছি মা !
২।
‘করোনা’ পরিস্থিতির তুঙ্গের মাঝেই ঘরে চাল
প্রায় বাড়ন্ত। সাথের মানুষ কাজ ফেলে বাজারে ছোটে। প্রয়োজনের চাইতে খানিকটা বাড়তি চাল বাসায় আসে- ভাত ছাড়া যে আমার বাঁচাই মুস্কিল! খাবার ফেলা বা নষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হলে আমি প্রচণ্ড
মানসিক চাপে পড়ি। প্লেটে একটা দানাও নষ্ট না করার বিষয়ে মায়ের ছিল কড়া
শাসন। প্রায়শই প্লেটের পড়ে যাওয়া ভাত খুঁটিয়ে আবার প্লেটেই তুলে নেই। স্বামী ঠাট্টা করে বলে –কামলা মানুষ ! খেতে বসলে যে একটু ছিটেই …! মনে পড়ে, বন্ধু সোহেলের সাথে খেতে বসেই বলতাম- প্লিস! সব খেয়ে শেষ কর, ফেলতে দেবোনা, ফ্রিজেও তুলবোনা কিন্তু ! আমার অত্যাচারে যারপরনাই অভ্যস্ত সোহেল উচ্চ হাসিতে মাঝে মাঝেই বলতো ‘তোরা একটা কুত্তা পাল না হয়’ ! ‘করোনা’ ইমারজেন্সী ফুড ষ্টক পরিস্থিতিতে নীরবেই
থাকি - কি বলতে কি বলবো, আবার কি না শুনতে হয়-তোমার আর চিন্তা
কি! মানুষ তো মোটে দু’জন, কতই আর লাগে? কামলা স্বামী আর তিন বেলাই পেটপূরে ভাত খাওয়া ‘ভেতো বাঙ্গালি’ আমার যে চাল ছাড়া…! ভিতরে চাপা হাসি বাঁধ ভাঙ্গে- এই মুহূর্তে Isolation, Corona crisis সামাল দেয়ার জন্য দুই সপ্তাহের চাল, ডাল সবসময়ের মত হাতেই
আছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকেই বলি- ভাত ছাড়া মানুষ বাঁচে কিভাবে?
৩।
বাসায় একা? সময় কাটে কিভাবে ? এই প্রশ্নে মনে কোন ‘Sensitivity’ অনুভব করিনা। ঠাট্টায় প্রসঙ্গটা বাতাসে উড়াই- আহা! বড়ই
শুন্য শুন্য দিন! গতিহীন, ছন্দহীন, বোরিং! সময় যে কাটেই না! একা হলেও যে মানুষের অবশ্য করণীয় কিছু গৎবাঁধা কাজ থাকে সেই ফিরিস্তি দেয়াটা
অবান্তর মনে হয়। কাব্য করে আবুল হাসানের কবিতা মুখস্থ বলি- ‘অবশেষে
জেনেছি মানুষ একা, জেনেছি মানুষ তার চিবুকের কাছেও ভীষণ অচেনা ও একা!’ ইন্টারভিউর ঘটনাটা
মনে পড়ে যায়। টেবিলের অন্য পাশে হাস্যজ্জল মুখ- এই ক্লাশের স্পেশাল নীড (Special Need) শিক্ষার্থীদের জন্য এই মুহূর্তে
তুমি বাস্তবমুখী কি পদক্ষেপ নিতে পারো ? চোখে চোখ রাখা অবিচল কণ্ঠ আমার – এই
স্পেশাল বাচ্চাদের শিক্ষক হিসেবে আমার ড্রিম একটাই! একা, নিজস্ব সময়কে ইন্ডিপেন্ডেন্টলি
চালিয়ে নেয়ার, উপভোগ করার যাদুকরী ক্ষমতাটা যাতে অবশ্যই অর্জন করতে পারে- সেই প্রোগ্রাম তৈরি করা। বলতে দ্বিধা নেই- চাকরীটা সে দফায় আমারই হয়েছিল। ‘করোনা’র এই সময়ে ‘Reflective Practice’ বিষয়টা প্রায়শই মাথায় ঘুরপাক খায়। শিক্ষক মাত্রই প্রতিদিন ক্লাশ শেষে পাঠের রিফ্লেক্সন বা প্রতিফলন এক জরুরী,
অবশ্য- করণীয় কাজ। পাঠের উদ্দেশ্য, উত্থাপিত প্রশ্ন-উত্তর, পদ্ধতি, উপকরণ, মূল্যায়ন প্রক্রিয়া কি যথার্থ ছিল? লার্নিং এক্সপেকটেশন কি অর্জিত হয়েছে?- ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্নের প্রতিফলনে শিক্ষকের আত্মমুল্যায়নের
(self evaluation) কাজটি ঘটে অবিস্মরণীয় ভাবেই । “We do not learn from experience. We learn from reflecting on
experience” – John
Dewey এর মনে গেঁথে যাওয়া সেই উক্তি মনে পড়ে। ভাবি, আচরণের অসংগতি বা ভুলগুলো কখনও কখনও মানুষের নিজের অজান্তে, অনিচ্ছাতেই ঘটে যায়। নিজেকে জানার, প্রতিফলনের, পরিবর্তনের, সংশোধনের এই বুঝি
এক সুবর্ণ সময়! ‘করোনা’ ক্রান্তিকালের এই নিরবিচ্ছিন্ন, একান্ত একা সময়!
৪।
ছেলেটার গায়ে হাত দিয়ে চমকে উঠি , বেশ জ্বর গায়ে ! ছোট, দুর্বল, অপরিণত দেহে নানা সমস্যা নিয়ে এক বিচিত্র
উপায়ে বেঁচে আছে! স্কুলের সময়টা ‘ইমারজেন্সি’ আর ‘ইনটেনসিভ’
কেয়ারেই কাটে। নানারকম স্বচালিত যন্ত্রপাতির হুইল চেয়ার নিয়ে চোখের পলকে ঘুরে বেড়ায়
ক্লাসময়। আজ কেমন নেতিয়ে গেছে। অফিসে জানানো, জরুরী নম্বরে ফোন, বাসায় পাঠানো সব কিছুই দ্রুত সিন্ধান্তে ঘটে। ‘করোনা’ র এই আগ্রাসী সময়ে জ্বর, কাশি, কফ ওঠার বিষয়টা ঘাবড়ে যাওয়ার মতই যে! মনটা ভার ভার লাগে। হটাত বিস্ময়ে খুশীর চমক লাগিয়ে শেষ দিন আবার চলে আসে ক্লাসে। দাপিয়ে বেড়ায় হুইল চেয়ার। নিজের মত নিজের ‘একা’ সময়ে ’বিচ্ছিন্ন’ হয়ে যায় ক্লাসের এক কোণে। প্রতিদিনের রুটিন মাফিক অন্য কাজে আজ আর ‘re-direct’ করিনা ওকে। এভাবেই কাটুক সময়- Structured, Organized, Goal-oriented, Independent,
Reflective প্রোগ্রামে ওর দিনটা হোক আনন্দময়, অর্থবোধক! আমার চোখে প্রশান্তির খেলা, অন্তরে মায়ের স্বর্গীয় মঙ্গল কামনা-সুস্থ থাকুক সন্তান! প্রতিহত হোক ‘করোনা’!
http://www.alokrekha.com
ঋতু মীরের "অবশেষে জেনেছি মানুষ একা" লেখাটা চমৎকার জীবন বোধ ও অভিব্যক্তির প্রতিভাস ।" Isolation is a way to know ourselves’ লিখেছেন কিন্তু এই মহা দুর্যোগে এই একাকিত্ব ভালো লাগে না। মনটা ছুতে যায় সবার খবর জানতে। কোথায় কি হচ্ছে কার কি হলো। অপার এক স্বেচ্ছা নির্বাসন।প্রার্থনা করি ভালো থাকুন! সুস্থ থাকুন।
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো ঋতু মীরের "অবশেষে জেনেছি মানুষ একা"লেখাটা পড়ে। উত্কৃষ্ট চমৎকার জীবন বোধ ও দারুন অভিব্যক্তির প্রকাশ। অনেক কিছু শেখার আছে এই লেখনীতে। লেখকের ভাষায় বলি " মঙ্গল কামনা-সুস্থ থাকুক সন্তান! প্রতিহত হোক ‘করোনা’! "
ReplyDeleteলেখাটা পরে খুব ভালো লাগলো। আমাদের অন্তরের কথা তুলে ধরেছেন। এক থাকা আমার খুব ভালো লাগে। নিজেকে তিল তিল করে আবিষ্কারের শ্রেষ্ঠ সময়। কিন্তু এই একাকিত্ব আমি চাই না যেখানে সারা বিশ্ব একাকিত্বের আতঙ্ক বিরাজ করছে।ঋতু মীরের অবশেষে জেনেছি মানুষ একা ! দারুন অভিব্যক্তি ও উত্কৃষ্ট চমৎকার জীবন বোধের প্রকাশ। অপূর্ব বিষয় বস্তু,ভাষাভাব ও শব্দচয়ন ও রচনা শৈলী মিলিয়ে অনবদ্য ও অনিন্দ্য সময় অনুযায়ী লেখা।
ReplyDeleteঋতু মীরের অবশেষে জেনেছি মানুষ একা ! দারুন অভিব্যক্তি ও উত্কৃষ্ট চমৎকার জীবন বোধের প্রকাশ।অপূর্ব বিষয় বস্তু,ভাষাভাব ও শব্দচয়ন ও রচনা শৈলী মিলিয়ে অনবদ্য ও অনিন্দ্য সময় অনুযায়ী লেখা । লেখক ঋতু মীর ও আলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
ReplyDeleteঋতু মীর -এর অবশেষে জেনেছি মানুষ একা !এক অনবদ্য লেখা। নিজেকে ও করোনা ভাইরাসের সময়কে তিনি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা প্রশংসার দাবিদার। চমৎকার রচনাশৈলী ও স্বতন্ত্র ভাব ও ভাষা প্রয়োগে চমৎকার একটা লেখা । অনেক শুভেচ্ছা কবি। আপনি ভালো থাকুন আরো লিখুন !
ReplyDeleteঋতু মীর খুব মন কেমন করা লেখা
ReplyDeleteঅনেক ভালো লাগলো
আমরা যদিও ভান করি আমরা একা নই
আমাদের ঈশ্বর আছে আমাদের প্রিয় জন আছে
আসলে শেষমেশ আমরা একাই
আমার আরো কষ্ট আমি হাজার কোলাহলের মাঝে থেকেও খুব একা
এখন নয় ; আমার শৈশব থেকেই
অনেক কৃতজ্ঞতা আমার ভেতরের আমিকে নুতন করে জাগিয়ে দেয়ার জন্য
অনেক শুভ কামনা
ঋতু মীর এর লেখায় যেটি আমার কাছে সবচেয়ে বেশী উপভোগের সেটা হচ্ছে প্রাসঙ্গিকতার পরিমিতি এবং সেটা বজায় রেখে অত্যন্ত যত্ন সহকারে এবং লেখার বিষয়বস্তু ও বক্তব্য পাঠকের বোধগম্য করার প্রতি শ্রদ্ধা ও সেজন্যে তার নিজের দায়িত্বশীলতার প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখে যথার্থ শব্দ চয়ন এবং নিখুঁত গাঁথুনীতে সেই শব্দগুলো সাজিয়ে বাক্যের মালা আমাদের উপহার দেন! তার লেখা পড়তে গিয়ে পুঁথিপাঠ উদ্ভুত ব্যঞ্জনার মত একটা ভালোলাগা পাঠককে ধরে রাখে। এক বাক্যের শেষে উনি পরবর্তী বাক্যের বিষয়ের একটা clue দিয়ে দেন। অনেকটা কুশলী গায়ক যেমন গানের মাঝে সুরের একটা স্তর থেকে অন্য স্তরে যাবার আগে আলতো স্পর্শে ছেড়ে যাওয়া স্তরটাকে ছুঁয়ে পরবর্তী স্তরের সুরটাকে কণ্ঠে তুলে নেন ঋতু মীরের লেখায় অত্যান্ত স্পষ্টভাবে সেই মুন্সীয়ানাটা পাঠককে মোহিত করে ! জয় করে নেয় পাঠক হৃদয় !
ReplyDeleteপ্রতিটি মানুষের ভিতরেই বোধহয় বাস করে এক নির্জন মানুষ। নির্জন এই সত্ত্বা নিয়ে অনেক মানুষের ভিড়েও মানুষ একা। আর তার সেই বিমূর্ত মানসিক অনুভুতির নামই বুঝি একাকীত্ব! সুপ্রিয় পাঠক! ব্যাক্তি জীবনের সাতকাহন গাওয়া এবং পাঠকের মনের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার অনির্বচনীয় আনন্দ আমাকে আপ্লূত করেছে। এ পাওয়া সৃষ্টি সুখের উল্লাসের আনন্দে ভরা! অনেক ধন্যবাদ মুল্যবান সব মন্তব্যের জন্য- মনের নির্জনতা সম্পূর্ণ হরণ করে...পাঠক! আমারে তুমি অশেষ করেছো...! অশেষ ধন্যবাদ আলোকরেখা !!
ReplyDelete