আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও শুভাশীষকে চিঠি' .পর্ব ২... ৯ নম্বর চিঠি থেকে..………. মুনা চৌধুরী ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    শুভাশীষকে চিঠি' .পর্ব ২... ৯ নম্বর চিঠি থেকে..………. মুনা চৌধুরী

    শুভাশীষকে চিঠি' ......………. মুনা চৌধুরী


    'শুভাশীষ কে চিঠি’.... ৯ নম্বর চিঠি থেকে

    শুভ,
    কখনো কখনো কথা না বলে চুপ করে থাকাটাই ভালো লাগে। When silence is your best state of mind, তুমি চুপ হয়েই থেকো।

    আজ তোমায় একটা কথা বলি, তুমি হয়তো জানোনা, আমি অবিনশ্বরকে খুঁজেছি যখন- তোমায় পেয়েছি তখন। আবার অবিনশ্বরকে পেয়েছি তখন, তোমায় খুঁজেছি যখন। এখন তোমার মতো এককালের অবিশ্বাসী-বিশ্বাসী মাথা ঠুকে মরে ঈশ্বর-সন্ধানে আর আমার মতো একজন অন্ধ-বিশ্বাসী, যার কিনা হন্য হয়ে পড়ে থাকার কথা শুধুমাত্র ঈশ্বর-প্রেমে, সে কিনা প্রতিটা প্রার্থনায় খুঁজে ফেরে তোমাকে। এটাকে তুমি কি বলবে? আমি চলে গিয়ে ঘুরিয়ে দিলাম তোমায়, আর তুমি তোমার অন্বেষণ  খুঁজে ফেরালে আমায়। আমি আর এখন রুমির মতো বলিনা, ‘I searched for God & only found myself & searched for myself and found only God’. আমি বলি, ‘I searched for God & only found you. I searched for you & only found God’.
    তুমি যে তোমার পথের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছো আমি এতেই খুশি। তোমার জন্য স্বয়ং অবিনশ্বর যে সময় নির্ধারন করেছিলেন, সেই সময়ই তুমি তোমার ঠিকানা খুঁজে পেয়েছো। আমি সব সময় জানতাম তোমার ভেতর তিঁনি লুকিয়ে আছেন, ওঁর সাথে তোমার যা ছিল, সেটা ছিল তোমার অভিমান মাত্র।
    কিন্তু, আমার আজকালকার জীবনটা যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে, খুব অর্থহীন লাগে এই    সমাজের মানুষগুলোকে। কারো সাথে কেন জানিনা আর মানিয়ে চলতে পারিনা। সমাজে চলা, আত্মীয়তা, বন্ধু নির্বাচন বা নির্বাচিত হওয়া- সব কিছুতেই লম্বা চাওয়ার ফর্দ। মধ্যম মানের চেহারা, চামড়ার শুকনো ভাব, রংজ্বলা কাপড়, শিক্ষা, মূল্যবোধ, সংস্কার, এওলোর কোনো স্থান নেই কোথাও। পোশাকে ব্র্যান্ড, গাড়ির লেবেল, অ্যাকসেন্ট এ গুলোই চারপাশে অনেক দামি, অনেক জরুরি-- জীবনের ইতিবৃত্তে গৌরবের যা কিছু অর্জন যেমন শিক্ষা, প্রজ্ঞা, জ্ঞান, সংস্কার এসব এর  চেয়ে। যেন নজরুল এর 'হারায়ে গিয়াছে চাঁদ/জলভরা কালো মেঘে/আঁচলে লুকায়ে ফুল/বাতায়নে জেগে আছে'
    বন্ধু অথবা কলিগদের সাথে smoked salmon এর লাঞ্চন, বিকেলে ধূমায়িত কফির সাথে মাস্কার্পন পনিরে মোড়া তিরামিসু আমার ডাকে না। পার্থিব জীবনের বৈভবের মানদণ্ডগুলিকে আমি অনেক আগেই  জলাঞ্জলি দিয়েছি। আমি জানি সময় প্রায় শেষ, ঘড়ি চলছে টিক টিক, জীবনের গোধূলিতে দাঁড়িয়ে, আর  তাইতো মনে হয়ে অনেক কিছু শেখার বাকি, অনেক পড়ার বাকি, অনেক ফেলে রাখা অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করা বাকি।
    কিন্তু আমিও চারপাশের সবার মতো যেন একই খাঁচায় আটকে পড়া একজন, যেন একই ছাচে গড়া, চতুর, দাম্ভিক, সুযোগসন্ধানী, অন্তঃসারশূন্য, প্রচ্ছদসর্বস্ব, আত্মসুখপরায়ণ। আমি এদের মধ্যে, এদেরই মতো নানা জিনিসের সমাহার মাত্র। আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মতো, লন্ডনের রোটারিয়ানদের মতো, সানফ্রান্সিসকোর গলফারদের মতো, politically correct জাদরেল আমলাদের মতো, cold and tricky ব্যারিস্টারদের মতো বেঁচে আছি। একই অভিজাত বৃত্তে চলাচল, একই ধাতু দিয়ে গড়া, হুড়োহুড়ি করে একই টিউব এ, বাস এ, মেট্রোতে, রিক্সায়, ট্রামে, আটকে পড়া ট্রাফিক এ। যেন একই চুল শুধু ভিন্ন ভিন্ন রঙে, যেন কাপড়ের তলায় একই তৃষ্ণাত্র চামড়া– same thirsty layers of mischievous sins.
    খুঁজে বেড়াচ্ছি হন্য হয়ে শ্যামল সবুজ মানুষ। সবুজ মনের মানুষ, মাটির কাছাকাছি, প্রকৃতির কাছাকাছি, কবিতার কাছাকাছি, বিধাতার ছায়ায় গড়া ময় ভরা মুখ. জীবনান্দের কবিতা মনে পড়ে সারাক্ষন,
     'জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পর,
    তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার ......
    চোখের পাতার মতো নেমে চুপি কোথায় চিলের ডানা থামে
    সোনালী সোনালী চিল-
    শিশির শিকার করে নিয়ে গেছে তারে
    কুড়ি বছরের পড়ে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে'
    ……………….… তোমার মায়াভরা মুখটা কি আমার আর কখনো দেখা হবেনা?

    নীলিশ্বরী
    ২৫শে এপ্রিল ২০১৬,
    ধানমন্ডি, ঢাকা


    নীল,

    চ্যান্সেরি লেন স্টেশন থেকে বের হয়ে কয়েক কদম হেটে ডানে মোড় নিলেই ছিল তোমার ইউনিভার্সিটি: সিটি ল স্কুল, গ্রেস ইন। আর আমারটা ছিল লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স, হাওটন স্ট্রিট যা চ্যান্সেরি লেন থেকে হোবোর্ন হয়ে ৬ মিনিটের পথ। দিনটা ছিল ডিসেম্বরের কনকনে ঠান্ডায় ক্রিসমাসের হপ্তাদুয়েক আগে। সকাল আটটার দিকে তুমি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলে সবে, আর তাই স্টেশন থেকে বের হতে সিঁড়িবেয়ে সবে উপরে উঠছো। অবাক হয়ে দেখলে আমি দৌড়ে দৌড়ে আসছি এস্ক্যালেটার বেয়ে, সকাল বেলার মাইক্রো-ইকোনমিক্স ক্লাস বাদ দিয়ে। মনেহচ্ছিলো চুলোয় যাক জগত সংসার, চুলোয় যাক প্রফেসর রিচার্ড ম্যাকলারেন আর আমার গ্লোবাল মার্কেটে এনালিস্ট হবার অদম্য স্বপ্নটা।
    সেদিন আমায় অন্যরকম লাlগছিল, উস্ক খুস্ক চুল যা অন্তত সকালবেলায় আমার কখনোই থাকতোনা। সকালবেলায় আমার চুলগুলো থাকতো পরিপাটি করে আঁচড়ানো, মানি মার্কেটে ইংরেজ কর্পোরেটদের মতো। একেবারে সিনেমার ঢং এ, চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে, প্রায় জীবন বাজি রেখে দৌড়োতে দৌড়োতে তোমায় আমি ধরে ফেললাম। হাঁফাতে হাঁফাতে বললাম, ‘without wax or pomade my hair gets utterly unmanageable, absolutely diabolical, ghastly, horrendous and no less! And all of this mess is just because of you.’ বলেই তাকিয়ে থেকে আমি হাসতে লাগলাম আর সে সাথে তুমিও। আশেপাশে সবাই দেখছিলো আমাদের, আর আমরাও দেখছিলাম দুজনকে দুজনে। It was like eyes of two lovers met and the world was shattering into thousand pieces. We looked at each other shamelessly. ‘Uninhibitedly’ would be the apt word but ‘shamelessly’ sounds better. একেবারে নির্লজ্জ বেহায়ার মতো আমরা দুজন দুজনার দিকে তাকিয়েই রইলাম। তাকিয়ে থেকে তোমার হাতে গুঁজে দিয়েছিলাম নীল খামে ভরা তোমায় লেখা আমার প্রথম চিঠি।
    তুমি চলে যাবার সময় চিঠিটা আমায় ফেরত দিয়ে গিয়েছিলে। আমি ওটা আজো রেখে দিয়েছি। ভেবেছি যখন আবার দেখা হবে, তোমার জিনিষটা তোমায় আবারো ফেরত দেব। এতটাই আত্মবিশ্বাস ছিল যে আবার আমাদের দেখা হবে নিশ্চই। আত্মবিশ্বাস না এটা manifestation মাত্র। আমাদের প্রবল ইচ্ছেগুলি আর স্বপ্নগুলি আমরা নিজেরাই জাগতিক মাত্রায় নিয়ে আসলাম।
    নীলিশ্বরী, তুমি কি জানতে প্রণয় ফুরোয়, কিন্তু বসন্তের সমীকরণ ফুরোয় না? শারমিনির গল্পের মাধবী আর আদিত্যের মতো, আমাদের ও নির্দিষ্ট কোনো শুরু ছিলোনা, তাই শেষ ও ছিলোনা। অনেকটা শেষ নাহি যার। চেইন রিঅ্যাকশন এর মতো যা চলতেই থাকে, কখনো ফুরোয় না। আমি রয়ে গেলাম তোমার জীবনে তেপান্তরের মাঠে ঝোড়ো হাওয়ায় ছুটে চলা এক অশ্বারোহী হয়ে। হ্যা, বন্ধু কিন্তু আবার ঠিক বন্ধুও নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু যা সংজ্ঞায়িত করা যায় না পুরোপুরি।
    তোমায় চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে’- অনেকটা কবিতার মতো, অনেকটা লিরিক্যাল। তাই ১৯ বছর আমরা যুগান্তরের ঘুম ঘুমিয়ে আবার জেগে উঠলাম আর রয়ে গেলাম দুজনার জন্য দুজনে অলৌকিক আনন্দের ভান্ডার হয়ে সমস্ত দ্রোহ, অগ্নুৎপাত আর অভিমান পেরিয়ে। আমাদের প্রতীক্ষা নেই, বিরহ নেই, নেই মিলনের সুবর্ণরেখা। আজ তুমি ঘুমোও, আমি জেগে রই আর যখন আমি ঘুমোই, তুমি জেগে রও।
    রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে”……..

    শুভাশীষ,
    ১লা মে ২০১৬,
    টাওয়ার হিল, লন্ডন


    শুভ
    মনে আছে তুমি আবৃত্তি করতে আর আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতাম তোমার স্বর্গীয় ভরাট গলায় রবিঠাকুরের 'হঠাৎ দেখা',
                ''যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
    শুনব তোমার মুখে।…..
    'আমাদের গেছে যে দিন
    একেবারেই কি গেছে,
    কিছুই কি নেই বাকি l '
    একটুকু রইলেম চুপ করে;
    তারপর বললেম,
    'রাতের সব তারাই আছে
    দিনের আলোর গভীরে।''
    আমার সাত সকালের post vanilla-cinnamon আর hint of nutmeg পেরিয়ে, অন্ধকার মেঘাচ্ছন্ন টিপ্ টিপ্ বৃষ্টিভেজা ভোরবেলায়, পরীক্ষার হলে ঘুমশূন্য চোখে ছুটে যাওয়া, আর সেই মুহূর্তে তোমার পাগলের মতো দৌড়ে আসা! এক জন্মে কি ভোলা যায়? অবাক হয়ে দেখেছিলাম you were running like a mad man to this silly woman, a woman so desperately in love. পালিয়ে গেলো যত্তসব রাত জাগা, sleep deprivation!এতটাই সুন্দর ছিল আমাদের দিনগুলি আর ঠিক সেই রকম ভয়ংকর ছিল তোমার ব্যক্তিত্বের অন্ধকার দিকটা।
    আমি তোমায় পুরোপুরি বুঝতাম না কারণ বুদ্ধিদীপ্ত তুমি আর তোমার ব্যক্তিত্বের অন্ধকার দিকটার সাথে বোকা-সাদামাটা আমি ছিলাম একেবারে বেমানান। শুরুতেই হেসে বলেছিলে you were a dark man with a very dark side যেটার মর্মার্থ আমি কিছুই বুঝিনি তখনো, কিন্তু বোকার মতো ভাবতাম dark romantic! এই বোকা, নির্বোধ আমি, ঠিক তখনো বুঝে উঠতে পারিনি মানুষ নামের আমাদের মনস্তত্ব। তুমি ছিলে চিরকালের বেয়াড়া, সেই তুমিও ভেঙ্গেছিলে এই বোকা, নির্বোধ মেয়েটার ভালোবাসার কাছে, যদিও সেই ভালোবাসার স্থায়িত্ব ছিল স্বল্পকাল।
    কালবৈশাখী, জল, অশ্লেষা, প্লাবন ছিল তোমার ব্যক্তিত্বের অন্ধকার দিকটার সখ্য আর তাই তোমার প্রলয় ধ্বংস করতে পারতো সব অনুশাসন। এসব সবাই জানে না, তবে আমি জানি কারণ আমি দেখেছি। মনে করতে চাইনি, কিন্তু কেন যেন আজ মনে পড়ে গেলো। আমি অবাক হয়ে দেখেছি, ঠান্ডা মাথায় তুমি জলজ্যান্ত আমায় কিভাবে দুই হাতে মাটি চাপা দিয়েছিলে। তোমার 'উচিত' টাই জিতে গিয়েছিলো আমার 'ইচ্ছের' কাছে। ওই ভয়ংকর অন্ধকার প্রলয় ভুলতে আমার যুগ পেরিয়েছে। আমি আজো ভুলতে পারি না সেই সর্বনাশের মাসটা। Now every year when কৃষ্ণচূড়া returns with vengeance with its luscious red, it reminds me of May. Precisely 19th May!   
    তোমার কথার খেলায় একটা অদ্ভুত কেমন যেন মাদকতা থাকতো।বোকা আমি, তোমার কথার খেলায় মুগ্ধ, বাকরুদ্ধ থাকতাম। Maybe I was the perfect pray. ভালোবেসেছিলে সত্যি, কিন্তু কোথায় যেন হঠাৎ করে আমি শিকারির শিকার হয়ে যেতাম, যে শিকার নিজেই ধরা দিতো বার বার, জেনে না-জেনে, বুঝে না-বুঝে। প্রথম দিকটায় এসব কিছুই বুঝতাম না, পরে যখন বুঝেছি তখন করবার কিছুই ছিলোনা। ঐ যে ট্যাবু শব্দটা আছে না, যেটা তুমি সহজে বলতেনা, the taboo word called ‘love’সব ঠিক থাকতো, হয়তো হেসে খেলে সব ভালোই যেত, কিন্তু তোমার হঠাৎ কিছু একটা করতে হতো, অদ্ভুত কিছু একটা যা আমাকে ভয়ংকর কষ্ট দিতো। এক মুহুর্তে ছিন্নভিন্ন করতে বিশ্বাসের প্রাচীর, যা তুমি নিজ হাতেই তৈরী করতে, নিজ হাতেই তা গুড়িয়ে দিতে এক মুহূর্তে। এ কেমন দুঃখের মত আনন্দ ছিল তোমার! নিরর্থ, নিরেট পাগলামি! এ কেমন যেন ধ্বংসযজ্ঞে মেতে ওঠা তোমার, সবাইকে চারপাশ থেকে সরিয়ে একা থাকবার দুর্দান্ত প্রচেষ্টা।
    ‘Loner’ as you called yourself, as you still call yourself. Vikram Seth এর কবিতার মতো with no companion to your mood against the wind as it was, you walked, but in your solitude, bow to the wind that buffeted you.
    বাতাস ভেঙে যে তুমি নিজেই অচিন পাখির সুর আমার জন্য এনে দিতে, সেই সুরকে তুমি নিজিই গলা টিপে খুন করতে। একটা অদ্ভুত নেশাগ্রস্ত তুমি একটা ধ্বংস ধ্বংস খেলায় যখন ইচ্ছে মেতে উঠতে। Maybe you were trying to be unique among the crowd with your impeccable performance of repeated self destruction! You had to be different. You couldn’t be a mediocre! You were a ‘Narcissist’ in your very own way to be flawlessly unique আর সব narcissistরা তো আর আয়নায় তাকিয়ে নিজের মুখ দেখে না।
    ‘It was the best of times, it was the worst of times, it was the age of wisdom, it was the age of foolishness, it was the epoch of belief, it was the epoch of incredulity, it was the season of Light, it was the season of Darkness, it was the spring of hope, it was the winter of despair’  …… as if we got stuck within the legend of A Tale of Two Cities.

    নীলিশ্বরী
    ১২ই মে  ২০১৬,
    ধানমন্ডি, ঢাকা

    শুভাশীষ,
    গতকালের চিঠিটা অভিমান করে শেষ করেছিলাম। সারারাত ঘুমাতে পারিনি তাই। একটা কষ্ট দানা বেঁধে ছিল বুকের ভেতর। কষ্ট পাই এখনো যখন তোমায় আমি কষ্ট দেই। কিন্তু কালকে তোমায় মন খুলে সব বলে ফেলেছিলাম। এমন অনেক কথা বলে ফেলেছি যা বলা উচিত ছিলনা হয়তো। মন ভালো ছিলোনা। কোনো কারণ ছাড়াই মন ভালো ছিলোনা কাল। তাই বলে ফেলেছি যা পুষে রেখেছিলাম ১৯ বছর ধরে।
    রাগ করো না, কিছু মনে করো না। যত যাই হোকনা কেন, তুমি তুমিই থাকবে, being Impulsive sometimes, destructive sometimes, terming yourself to be a loner when you are surrounded by so many of us who loves you. তোমার বাবা মা, তোমার লক্ষীবৌ, তোমার আদরের ছেলেরা, সেই সাথে আমি তো চিরকালই রয়ে গেলাম। তোমায় এইসব শূন্যতা, একাকিত্ব অথবা ধ্বংসযজ্ঞ কেন জানিনা, এতোকাল বলোনি, যদি কোনোদিন বলতে চাও এখনো, শুনবো।
    তুমি ভালো মন্দ হয়েই আমাদের সবার মাঝে বেঁচে থেকো, ভালো থেকো চিরকাল। সৃষ্টিকর্তা যেন তোমায় যুগ যুগ বাঁচিয়ে রাখেন। May You live even when I am gone from this worldly station, may you grow to be a grandfather and tell your glorious tales to your grandchildren. 

    নীলিশ্বরী
    ১৩ই মে ২০১৬,
    ধানমন্ডি, ঢাকা

    নীলিশ্বরী,
    তোমায় তাড়িয়ে দিয়েছিলাম, খুব ভয়ানক ভাবে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম যেমনটা বলেছো হয়তো তার চাইতেও আরো অনেক বেশি কঠিন করে, আরো অনেক বেশি রূঢ় হয়ে। কিন্তু এরপর আমি যে মহাকাল পেরিয়েছি সেটা কি তুমি জানো? একটা মহাকাল যা ছিল একটা দীর্ঘ ঝোড়ো রাত, গুমোট বাধা কৃষ্ণ অন্ধকার, প্রলয়কারী সর্বনাশা কালবৈশাখী। একসময় সেই প্রলয় কমে গেছে কিন্তু জন্ম দিয়ে গেছে বুকের ভেতর একটা হাহাকার। 
    তবে জানো, এখনো বেঁচে আছে আমাদের খন্ড-খন্ড, বিক্ষিপ্ত মুহূর্তগুলো! Weren’t we both a horizon each? In us the ocean met the sky, Guns n Roses met Tagore, Neruda met Rumi. It was like two lost souls met after years of wandering. যেন আমাদের দুটো আত্মা হাজার বছরের জমিয়ে রাখা কথা বলে শেষ করবার বার্থ চেষ্টা করতো সারাক্ষন!
    আমাদের চলে যাওয়া কারো প্রস্থান ছিলোনা, বন্ধন ছিন্ন করা শত আর্ত রজনী ছিলোনা। আমাদের চলে যাওয়া, নতুন করে জন্ম দিয়েছিলো আমাদের থেকে যাওয়া, আমাদের রয়ে যাওয়া-- সমস্ত না থাকা জুড়ে।
    কালকে তোমায় দেয়া আমার প্রথম চিঠিখানা খুঁজে পেয়েছি। ওই যে সেদিন বললাম তোমার সাথে দেখা হলে তোমার জিনিসটা তোমায় ফিরিয়ে দেব। আমি লিখেছিলাম,
    ‘I dreamt of us last night sitting at a café. I was wearing a midnight blue dinner jacket with a white dress shirt. The black bow tie was around my neck, not being tied but unfastened and hanging. The first button of my shirt was unbuttoned. Looking at me, you stood up, pulled my hands, untied your hair and was ready to dance the night away. But strangely something possessed you and you unbuttoned rest of the buttons of my shirt and ran your fingers through my bare chest where meringue melted over Godiva’!
    তোমার নরম চুলের গন্ধ নেবার স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমার শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাজত তোমার ঘন্টা। আধো আলো, আধো গোধূলিতে আমি যখন তোমাতে, তুমি আর তোমাতে ছিলে না। তুমি হয়েছিল বুনোফুল, সাঁওতালি মেয়ে আর আমার পোষমানা পদ্ম-ভ্রমর।তুমি আমায় আর আমি তোমায় নিয়েছিলাম অশেষ পৌনঃপুনিকতায়।
    শুভাশীষ
    ২২শে মে ২০১৬,
    ধানমন্ডি, ঢাকা 

    ক্রমশঃ-----------------------
     http://www.alokrekha.com

    24 comments:

    1. অদ্রিতা সেনDecember 5, 2018 at 5:25 PM

      চিঠির মাধ্যমে শুভাশীষ ও নীলের কথোপথন হৃদয়ের রক্তাক্ষরে লেখা। এই লেখা এক নিঃশ্বাসের পড়ার নয় অনুধাবন করার মত। লেখক মুনা চৌধুরীর যতই প্রশংসা করি কম।অনেক ভালো থাকবেন। বাকি লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

      ReplyDelete
      Replies
      1. আদ্রিতা কে ধন্যবাদ.

        Delete
    2. মমতা সাধনDecember 5, 2018 at 5:32 PM

      মুনা চৌধুরীর শুভাশীষকে চিঠি' পড়ে মন্ত্র মুগ্ধের মত বসে রইলাম। বুকের মধ্যে এক কষ্ট উথলে উঠলো। পৃথিবীর সব প্রেমই এমন হয় ? রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে।' কথাটা আবার অনুভব করলাম লেখক মুনা চৌধুরী । প্রিয় লেখককে ভালোবাসা আর ধন্যবাদ আলোকরেখা।

      ReplyDelete
      Replies
      1. মমতা, আমি যে প্রিয় লেখক শুনতে কি ভালো লাগলো! ভালো থাকবেন.

        Delete
    3. মেহের আফরোজDecember 5, 2018 at 5:35 PM

      লেখাটা পরে বারবার ন'হন্যতে লেখাটাই চোখের পাতায় ভেসে উঠলো। শুধু বিরহের কথা নয় অনেক প্রেমের কথাও মুগ্ধকর । অনেক শুকামনা লেখকের জন্য।

      ReplyDelete
      Replies
      1. ন'হন্যতে has been my Bible. ন'হন্যতে তুলনাহীন আর তার সাথে কোনো কিছুর তুলনা চলে না :)

        Delete
    4. কি দারুন গভীরতা ,ভাব মনের ভেতর অতল তলে অনুরণ সৃষ্টি করে। কত বার যে পড়ালাম। লেখক মুনা চৌধুরী যেন আমার মনের কথাই বলছেন। অনেক ভালোবাসা । আলোকরেখা অনেক ধন্যবাদ এমন একজন গুনি লেখকে পরিচিত করিয়ে দেবার জন্য।

      ReplyDelete
    5. ফরহাদ মাজহারDecember 5, 2018 at 5:49 PM

      আমি সারারাত জেগেই কাটাই ।তাই আলকরেখা খুলে পড়তেই চোখে পড়লো লেখক মুনা চৌধুরীর শুভাশিসের চিঠি।এ শুধু দুজনার প্রেমের গল্প নয়। আধ্যাত্মিক রচনা -"আমি অবিনশ্বরকে খুঁজেছি যখন- তোমায় পেয়েছি তখন। আবার অবিনশ্বরকে পেয়েছি তখন, তোমায় খুঁজেছি যখন। এখন তোমার মতো এককালের অবিশ্বাসী-বিশ্বাসী মাথা ঠুকে মরে ঈশ্বর-সন্ধানে আর আমার মতো একজন অন্ধ-বিশ্বাসী, যার কিনা হন্য হয়ে পড়ে থাকার কথা শুধুমাত্র ঈশ্বর-প্রেমে, সে কিনা প্রতিটা প্রার্থনায় খুঁজে ফেরে তোমাকে।" এখানে লেখকের প্রেম রূপান্তরিত হয়েছে অধ্যাত্মবাদে।

      ReplyDelete
    6. অনিমেষ চ্যাটার্জিDecember 5, 2018 at 6:02 PM

      শুভাশিস কে চিঠি' লেখক মুনীর চৌধুরীর হৃদয় ক্ষরণের রক্ত দিয়ে লেখা এক চিঠি। চিঠিগুলোর উপরে লেখা বা এর গুনগত মানের উপর লেখার যোগ্যতা আমার নেই। শুধু বলতে পারি চমৎকার রচনাশৈলী ও স্বতন্ত্র ভাব ও ভাষা প্রয়োগে কাব্যিক ছন্দোবদ্ধ দারুন চমৎকার একটা লেখা । অনেক শুভেচ্ছা কবি। আপনি ভালো থাকুন আরো লিখুন

      ReplyDelete
      Replies
      1. লিখতে গিয়ে আপনি ভুল করে মুনির চৌধুরী লিখে ফেলেছেন. এত্ত প্রশংসায় আমি উচ্ছসিত. আপনিও ভালো থাকবেন.

        Delete
    7. মোহন রায়হানDecember 5, 2018 at 6:14 PM

      শুভাশিস কে চিঠি' লেখক মুনা চৌধুরীর লেখায় শিক্ষা, প্রজ্ঞা, জ্ঞান, সংস্কার সবটুকুই পাই। বিশেষ করে অধ্যাত্মবাদ সাহিত্য সে প্রাচ্যের হোক বা পাশ্চাত্যের হোক অনবদ্য রূপে অভিব্যক্ত হয়েছে। সমাজের উচ্চ শ্রেণীর রূপ অংকিত হয়েছে চিঠি লেখার ছলে। সব মিলিয়ে অনবদ্য এক সাহিত্য। অনেক ভালো থাকুন আরো এমন লেখা উপহার দিন এই কামনা করি।

      ReplyDelete
      Replies
      1. Spirituality & Islamic Mysticism are subjects that I adore. So the influence they have on me came with the flow of the writing. Thank you for your comment and kind words.

        Delete
    8. মেহতাব রহমানDecember 5, 2018 at 6:19 PM

      শুভাশিস কে চিঠি' লেখক মুনা চৌধুরীর লেখায় হৃদয় নিংড়ানো অনুভূতির কি গভীর প্রকাশ।গহীন জগতে কখনো শান্ত যদি আবার কখনো জোয়ার ভাটায় আবার খরস্রোতা যদি ক্ষুদার্থ বাজে পাখির মত আঁকড়ে ধরে.কবির অভিমানী চেতনার অভিব্যক্তি এই লেখা । নিদারুন একটা অনেক ভালো থাকুন আরো এমন লেখা উপহার দিন এই কামনা করি।

      ReplyDelete
    9. কাকলি আহমেদDecember 5, 2018 at 6:26 PM

      লেখক মুনা চৌধুরীর "শুভাশিস কে চিঠি' লেখায় মন ও মননের সেতুবন্ধন রচিত। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম এবং আছি বাকি লেখা চিঠিগুলি পড়বার জন্য। মনটা ভরিয়ে দিল। দারুন অনুভূতি কবিতা বার বার পড়তে ইচ্ছে করে। ! আলোকরেখাকে ও লেখক মুনা চৌধুরীকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা ।

      ReplyDelete
    10. হিল্লোল চৌধুরীDecember 5, 2018 at 6:29 PM

      লেখক মুনা চৌধুরীর "শুভাশিস কে চিঠি' লেখায় নতুন দিনের খবর। দারুন অনবদ্য কবিতা বরাবরের মতই! অপূর্ব ভাব ! অনন্য উপমা! শব্দের মুক্তা মালা!আবাহন আলোর নতুন দিনের! অনেক সুন্দর লেখা ! শুভেচ্ছা রইল!

      ReplyDelete
      Replies
      1. পাঠকের ভালোলাগাই আমার চালিকা শক্তি.

        Delete
    11. আমি আর কি বলব? অন্য রকম এক অনুভুতি জাগলো চিঠির আলোকে জীবনের গল্প পড়ে ।।

      ReplyDelete
    12. Thank you for appreciating. God bless.

      ReplyDelete
    13. প্রদীপ সেন গুপ্তDecember 7, 2018 at 7:21 PM

      মুনা চৌধুরীর শুভাশীষকে চিঠি' .পর্ব ২.বহুদিন পর উচ্চ মানের সাহিত্য পড়ে মনটা ভরে গেল। হৃদয় নিংড়ানো অনুভূতির কি গভীর প্রকাশ। মুনা চৌধুরীর শুভাশীষকে চিঠি' .পর্ব ২.বহুদিন পর উচ্চ মানের সাহিত্য পড়ে মনটা ভরে গেল। হৃদয় নিংড়ানো অনুভূতির কি গভীর প্রকাশ। আন্তরিক শুভাশীষ জানবেন লেখক মুনা চৌধুরী। অপেক্ষায় রইলাম বাকিটা পড়ার জন্য।

      ReplyDelete
    14. চারুলতাJanuary 7, 2019 at 4:15 PM

      মুনা চৌধুরীর শুভাশীষকে চিঠি পড়ার অপেক্ষায় আছি। আলক রেখার কাছে বিশেষ অনুরোধ যেন তাড়াতাড়ি প্রকাশ করে আমাদের পড়ার সুযোগ করে দেয়

      ReplyDelete
      Replies
      1. খুব শীঘ্রই আপনাদের অপেক্ষার পালা শেষ হবে। এমন অধীর আগ্রহে আলোকরেখায় প্রকাশিত কোন লেখা পড়ার জন্য এই আকিলতার জন্য আমরা ধন্য। অনেক অনেক ভালোবাসা চারুলতা আপনাকে। এভাবেই আমাদের সাথে থাকুন তবেই আলোকরেখার চলার পথ সুগম ও মসৃন হবে। সকল পাঠক লেখক ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই শুভেচ্ছা।

        Delete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ