নিরুদ্দেশ অভিসারিকা
।।।।।।।।।অনার্য অধীর
পারমিতা,
তোমার নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া
আমাকে নৈমিষ্যারণ্যে পৌঁছে দেয়
তোমাকে খোঁজার পথকে টেনে টেনে নৈমিষ্যারণ্যে পৌঁছে দেয়
সাধুদের দেখা পাই আমি
আমারও সব কিছু সাধু হয়ে যায় ;
শুধু মনটা বাদে সব কিছুকে বৈরাগ্যের বাঁধনে বাঁধতে পারি আমি
জীবনানন্দ সব ভুলতে পেরেছিল
জীবনানন্দের সঙ্গে কী অদ্ভূত মিল আমার!
তিনি ট্রামের নিচে জীবন দিয়েছিলেন
আর আমি তোমার নিচে
শিবের বক্ষে পদচিহ্ন এঁকে দিয়ে
কি আর নৈমিষ্যারণ্যের সাধনা সফল হওয়া যায়?
বৃথায় যায় গঞ্জিকার ধোঁয়া
ভাবছি সোমরসেই ফিরে যাব
জীবনানন্দকে অমরতা দিয়ে যাব
তোমার চরণতলে বলীর মঞ্চে
অক্ষয় করে।
তবু তোমার লালটিপের জয় হোক।




লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে 







নিরুদ্দেশ অভিসারিকা " কবিতায় কবি অনার্য অধীর তার প্রিয়তমা পারমিতার হারিয়ে যাওয়া বা দূরে চলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে গভীর আত্মিক ও মানসিক যন্ত্রণার কথা বলেছেন। প্রিয়জনের অনুপস্থিতি তাকে যেন নৈমিষ্যারণ্যের (মহাভারতের পবিত্র তপোবন) মতো নিঃসঙ্গ, কঠোর, আধ্যাত্মিক এক জগতে নিয়ে যায়। সেখানে সবকিছু ত্যাগ করতে পারলেও নিজের মনকে বৈরাগ্যের বাঁধনে বাঁধতে পারে না। জীবনানন্দ দাশের ব্যক্তিজীবন ও মৃত্যু-আখ্যানের সঙ্গে নিজের জীবনের মিল খুঁজে পেয়ে কবি জানান যে, তিনি যেন পারমিতার পায়ের নিচেই নিজের অস্তিত্ব বিসর্জন দিয়েছেন। শিব, বৈরাগ্য, গাঁজা, সোমরস—এই প্রতীকগুলো দিয়ে তিনি তপস্যার ব্যর্থতা ও প্রেমের প্রতি তাঁর চরম আত্মসমর্পণ প্রকাশ করেন। সবশেষে, আক্ষেপ-দহন সত্ত্বেও কবি প্রিয়জনের লালটিপের জয় কামনা করেন—যা তার প্রেমকে পূর্ণতা ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে শেষ করে।
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীর "নিরুদ্দেশ অভিসারিকা " কবিতায় ভাষার সুরেলা প্রবাহ কবিতার শব্দচয়ন অত্যন্ত কাব্যিক "বৈরাগ্যের বাঁধন", "নৈমিষ্যারণ্যের সাধনা", "লালটিপের জয়" এসব প্রকাশভঙ্গি কবিতার রোমান্টিক বেদনা বাড়িয়ে দেয়। সমাপ্তির সৌন্দর্য শেষ লাইনে "তবু তোমার লালটিপের জয় হোক" কবি নিজের যন্ত্রণার উপরে প্রিয়জনের মঙ্গলকামনাকে স্থান দিয়েছেন। এটাই কবিতাটিকে সবচেয়ে মানবিক করে তুলেছে। খুব ভাল লাগলো ।ভাল থাকবেন !!!
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীর "নিরুদ্দেশ অভিসারিকা " কবিতা পড়ে খুব ভাল লাগলো । আলোকরেখায় তিনি নতুন ।কিন্তু এরই মধ্যে মনে ঠাই করে নিয়েছেন । এই কবিতায় গভীর ভালোবাসার ব্যথা খুব স্পষ্ট হয়ে ধরা দিয়েছে। কবি বারবার বোঝাতে চেয়েছেন যে প্রিয়জনের হারিয়ে যাওয়া তাঁকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। পারমিতাকে না পেয়ে তাঁর জীবন যেন একাকী, শূন্য ও কঠিন হয়ে উঠেছে। এই মানসিক যন্ত্রণা কবিতার প্রতিটি লাইনেই টের পাওয়া যায়। কবিতার বিষয়বস্তু মনে দাগ কাটে ।অনেক অনেক শুভ কামনা ।
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীর "নিরুদ্দেশ অভিসারিকা " কবিতাটা অনবদ্য। এখানে নৈমিষ্যারণ্যের উল্লেখ কবিতাকে আধ্যাত্মিকতা দিয়েছে। নৈমিষ্যারণ্য সাধারণত তপস্যা, সাধনা আর নির্জনতার প্রতীক। কবি এই জায়গাকে ব্যবহার করেছেন নিজের হৃদয়ের অবস্থাকে বোঝাতে যেখানে তিনি শান্তি খুঁজতে চান, কিন্তু পাচ্ছেন না। এর মাধ্যমে প্রেমের দুঃখকে তিনি সাধনার রূপে দেখিয়েছেন।নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার বেদনাও রয়েছে । কবি বলেছেন তিনি সব কিছু ত্যাগ করতে পারেন, সব কিছু সাধুদের মতো করতে পারেন কিন্তু নিজের মনকে পারেন না। এটাই মানুষের স্বাভাবিক দুর্বলতা। প্রেমিকের মন কখনও যুক্তির কথা শোনে না, কবি সেটাই সরলভাবে জানিয়েছেন। পড়ে খুব ভাল লাগলো । অনেক অনেক শুভ কামনা ।
ReplyDeleteকবি অনার্য অধীর "নিরুদ্দেশ অভিসারিকা " কবিতাটা অনবদ্য। পড়ে খুব ভাল লাগলো ।কবিতার শেষ লাইনে অসাধারণ মানবিকতা ও মমতা প্রকাশ পেয়েছে। শেষে কবি বলেন—“তবু তোমার লালটিপের জয় হোক।” নিজের কষ্ট, ক্ষোভ, হতাশার পরও তিনি প্রিয়জনের ভালো থাকাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রেমের সবচেয়ে সুন্দর রূপ—যেখানে নিজের দুঃখের চেয়েও প্রিয়জনের সুখকে বড় ভাবা হয়—এই লাইনেই প্রকাশ পেয়েছে। অনেক অনেক শুভ কামনা ।
ReplyDeleteসবাইকে প্রণিপাত।
ReplyDelete