আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ

    নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ



    আজি এ প্রভাতে প্রভাতবিহগ
            কী গান গাইল রে!
    অতিদূর দূর আকাশ হইতে
           ভাসিয়া আইল রে!
    না জানি কেমনে পশিল হেথায়
           পথহারা তার একটি তান,
        আঁধার গুহায় ভ্রমিয়া ভ্রমিয়া
        গভীর গুহায় নামিয়া নামিয়া
        আকুল হইয়া কাঁদিয়া কাঁদিয়া
           ছুঁয়েছে আমার প্রাণ।
    আজি এ প্রভাতে সহসা কেন রে
           পথহারা রবিকর
    আলয় না পেয়ে পড়েছে আসিয়ে
           আমার প্রাণের ‘পর!
    বহুদিন পরে একটি কিরণ
           গুহায় দিয়েছে দেখা,
    পড়েছে আমার আঁধার সলিলে
           একটি কনকরেখা।
     প্রাণের আবেগ রাখিতে নারি
        থর থর করি কাঁপিছে বারি,
        টলমল জল করে থল থল,
        কল কল করি ধরেছে তান।
    আজি এ প্রভাতে কী জানি কেন রে
           জাগিয়া উঠেছে প্রাণ।
    জাগিয়া দেখিনু, চারিদিকে মোর
        পাষাণে রচিত কারাগার ঘোর,
    বুকের উপরে আঁধার বসিয়া
           করিছে নিজের ধ্যান।
    না জানি কেন রে এতদিন পরে
           জাগিয়া উঠেছে প্রাণ।



    জাগিয়া দেখিনু আমি আঁধারে রয়েছি আঁধা,
    আপনারি মাঝে আমি আপনি রয়েছি বাঁধা।
    রয়েছি মগন হয়ে আপনারি কলস্বরে,
    ফিরে আসে প্রতিধ্বনি নিজেরি শ্রবণ-’পরে।
    দূর দূর দূর হতে ভেদিয়া আঁধার কারা
    মাঝে মাঝে দেখা দেয় একটি সন্ধ্যার তারা।
    তারি মুখ দেখে দেখে আঁধার হাসিতে শেখে,
    তারি মুখ চেয়ে চেয়ে করে নিশি অবসান।
    শিহরি উঠে রে বারি,দোলে রে দোলে রে প্রাণ,
    প্রাণের মাঝারে ভাসি দোলে রে দোলে রে হাসি,
    দোলে রে প্রাণের ‘পরে আশার স্বপন মম,
    দোলে রে তারার ছায়া সুখের আভাস-সম।
    মাঝে মাঝে একদিন আকাশেতে নাই আলো,
    পড়িয়া মেঘের ছায়া কালো জল হয় কালো।
    আঁধার সলিল- ‘পরে ঝর ঝর বারি ঝরে
    ঝর ঝর ঝর ঝর,দিবানিশি অবিরল--
    বরষার দুখ-কথা,বরষার আঁখিজল।
    শুয়ে শুয়ে আনমনে দিবানিশি তাই শুনি
     একটি একটি ক’রে দিবানিশি তাই গুনি,
     তারি সাথে মিলাইয়া কল কল গান গাই
     ঝর ঝর কল কল--দিন নাই, রাত নাই।
     এমনি নিজেরে লয়ে রয়েছি নিজের কাছে,
    আঁধার সলিল -‘পরে আঁধার জাগিয়া আছে।
    এমনি নিজের কাছে খুলেছি নিজের প্রাণ,
     এমনি পরের কাছে শুনেছি নিজের গান।  




    আজি এ প্রভাতে রবির কর
    কেমনে পশিল প্রাণের ‘পর,

    কেমনে পশিল গুহার আঁধারে

     প্রভাত-পাখির গান।

    না জানি কেন রে এতদিন পরে

       জাগিয়া উঠিল প্রাণ।
      জাগিয়া উঠেছে প্রাণ,
    ওরে উথলি উঠেছে বারি,
    ওরে প্রাণের বাসনা প্রাণের আবেগ
    রুধিয়া রাখিতে নারি।
    থর থর করি কাঁপিছে ভূধর,
    শিলা রাশি রাশি পড়িছে খ
    সে,ফুলিয়া ফুলিয়া ফেনিল সলিল
    গরজি উঠিছে দারুণ রোষে।
    হেথায় হোথায় পাগলের প্রায়

    ঘুরিয়া ঘুরিয়া মাতিয়া বেড়ায়,

       বাহিরিতে চায়,দেখিতে না পায়
     কোথায় কারার দ্বার।


    প্রভাতেরে যেন লইতে কাড়িয়া
     আকাশেরে যেন ফেলিতে ছিঁড়িয়া
    উঠে শূন্যপানে---পড়ে আছাড়িয়া
    করে শেষে হাহাকার।






    প্রাণের উল্লাসে ছুটিতে চায়
    ভূধরের হিয়া টুটিতে চায়,
    আলিঙ্গন তরে ঊর্ধ্বে বাহু তুলি
    আকাশের পানে উঠিতে চায়।
    প্রভাতকিরণে পাগল হইয়া
    জগৎ-মাঝারে লুটিতে চায়।
    কেন রে বিধাতা পাষাণ হেন,
    চারি দিকে তার বাঁধন কেন?
    ভাঙ্‌ রে হৃদয় ভাঙ্‌ রে বাঁধন,
    সাধ্‌ রে আজিকে প্রাণের সাধন,
    লহরীর পরে লহরী তুলিয়া
    আঘাতের পর আঘাত কর।
    মাতিয়া যখন উঠিছে পরান
      কিসের আঁধার, কিসের পাষাণ !




    উথলি যখন উঠিছে বাসনা,
    জগতে তখন কিসের ডর!
    সহসা আজি এ জগতের মুখ
     নূতন করিয়া দেখিনু কেন?
    একটি পাখির আধখানি তান
     জগতের গান গাহিল যেন!
    জগৎ দেখিতে হইব বাহির
     আজিকে করেছি মনে,
    দেখিব না আর নিজেরি স্বপন
       বসিয়া গুহার কোণে।
    আমি ঢালিব করুণাধারা,
    আমি ভাঙিব পাষাণকারা
    আমি জগৎপ্লাবিয়া বেড়াব গাহিয়া
         আকুল পাগল-পারা;







    কেশ এলাইয়া, ফুল কুড়াইয়া,

    রামধনু-আঁকা পাখা উড়াইয়া,

    রবির কিরণে হাসি ছড়াইয়া,
           দিব রে পরান ঢালি।
    শিখর হইতে শিখরে ছুটিব,
    ভূধর হইতে ভূধরে লুটিব
    হেসে খলখল গেয়ে কলকল
           তালে তালে দিব তালি।
    তটিনী হইয়া যাইব বহিয়া--
    যাইব বহিয়া--যাইব বহিয়া--
    হৃদয়ের কথা কহিয়া কহিয়া
           গাহিয়া গাহিয়া গান,
    যত দেব প্রাণ বহে যাবে প্রাণ
           ফুরাবে না আর প্রাণ।
    এত কথা আছে এত গান আছে
           এত প্রাণ আছে মোর,
    এত সুখ আছে এত সাধ আছে
    প্রাণ হয়ে আছে ভোর।










    আমি যাব, আমি যাব, কোথায় সে, কোন্‌ দেশ--
     জগতে ঢালিব প্রাণ, গাহিব করুণাগান,
     উদ্‌বেগ-অধীর হিয়া , সুদূর সমুদ্রে গিয়া
                      সে প্রাণ মিশাব আর সে গান করিব শেষ।
    ওরে, চারি দিকে মোর
    এ কী কারাগার ঘোর !
      ভাঙ্‌ ভাঙ্‌ ভাঙ্‌ কারা, আঘাতে আঘাত কর্ !
                             ওরে,আজ কী গান গেয়েছে পাখি,
     এয়েছে রবির কর !














    অনন্ত প্রেম



    তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি
    শত রূপে শত বার
    জনমেযুগে অনিবার।
    চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয়
    গাঁথিয়াছে গীতহার,
    কত রূপ ধরে পরেছ গলায়,
    নিয়েছ সে উপহার
    জনমেযুগে অনিবার।
     যত শুনি সেই অতীত কাহিনী,
    প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
    অতি পুরাতন বিরহমিলনকথা,
    অসীম অতীতে চাহিতে
    দেখা দেয় অবশেষে
     কালের তিমিররজনী ভেদিয়া 
    তোমারি মুরতি এসে,
    চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে
       আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি  
     যুগল প্রেমের স্রোতে
    অনাদিকালের হৃদয়-উৎস হতে।
    আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা   
    কোটি প্রেমিকের মাঝে 
     বিরহবিধুর নয়নসলিলে, 
     মিলনমধুর লাজে    
    পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।
     আজি সেই চিরদিবসের প্রেম     
      অবসান লভিয়াছে
       রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে। 
     নিখিলের সুখনিখিলের দুখ,
     নিখিল প্রাণের প্রীতি
     একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে   
     সকল প্রেমের স্মৃতি
    সকল কালের সকল কবির গীতি।   
       


    0 comments:

    Post a Comment

    অনেক অনেক ধন্যবাদ