আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও ভ্রূণ ------------- সানজিদা রুমি ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    ভ্রূণ ------------- সানজিদা রুমি


    ভ্রূণ
    সানজিদা রুমি

    বুকের ভেতর প্রতি রাতে ঢুকরে কাঁদে একটি শিশু
    অনেকটা গোঙানির মত -কি বলতে চায় -কি তার দাবি
    কান পাতি -চোখ বুঝি কথা হতে ভেসে আসছে -
    কোথায় বা তার মুখচ্ছবি।
    শব্দের সাথে  পৌঁছে যাই চুপিসারে
    গার্বেজের  ক্যানে রাস্তার ধারে,
    আমার শিশুটি কাঁদিতেছে ক্ষানিকটা বিশুদ্ধ বাতাসের তরে
    চিৎকার করছে "মাগো বড় কষ্ট এই অন্ধ আস্তাকুঁড়ে।
    বড় আশা করে বাসা বেঁধেছিল আমার গর্ভে
    আমার নাড়ীর ধন
    আমার নিঃশাসে ছিল তার নিঃশ্বাস -হৃদয়ে হৃদয়ের স্পন্দন।
    ভালোবাসার চিহ্ন  হয়ে এসেছিল গর্ভকোলে
    সবুজ ঘাসে লুটোপুটি খাবে -রঙিন পৃথিবী দেখবে বলে।
    হোক সে ক্ষণকালের কিন্তু ছিল পূর্ন অনুভূতি মাতৃত্বের।
    আমি মাতৃত্বের দাবিদার ?
    নর পিশাচ নিষ্ঠুর আমি ভীরু সত্তার ।
    পূর্ণাঙ্গ শিশু নয় ,ভ্রূণ- জমাট রক্তের -
    আমার জীবনের ভুল অস্বীকৃত অস্তিত্বে
    নিমেষে তরল হলো সে সুনিপুন কঠিন হস্তে।
    কালো হাত নয় -সে হাত ছিল শ্বেত স্বর্ণ কিশোরীর
    কেবলি প্রশ্ন করে "কেন হতে দিলি না মা পূর্ণাঙ্গ শরীর "-
    পিতৃহীন ছিলাম বলে অবৈধ কোষের সন্তান
    বীর্য কি মা এতই ক্ষমতাবান ?
    কত বীর্য ভেসে যায় জলে- কত মরে সহমেহনে
    তুই কেন ধরে রাখিসনি মা- আপন নাড়ীর টানে।
    মনে ছিল ভয়--- কোথা পাবি পরিচয় ?
    না হয় তোর নাম থাকতো শুধু  আমার নামের পাশে
    মাগো ! -----
    ভাঙতাম সমাজের বাঁধা আইন তুই আমি মিলেমিশে।
    কেবল তোর সন্তান বলে থাকতো অপবাদ মমশিরে
    মানব জন্মের বড় লজ্জা এখন এই অন্ধ আস্তাকুঁড়ে।


    সানজিদা রুমি কর্তৃক গ্রথিত http://www.alokrekha.com

    9 comments:

    1. পাপিয়া আহমেদFebruary 29, 2020 at 6:20 PM

      সানজিদা রুমি 'র ভ্রূণ । চমৎকার এক খানি কবিতা পড়লাম।যে কঠিন বার্তা তিনি দিয়েছেন তা মর্মস্পশী। খুব সুন্দর। সমাজের বাঁধা আইন -এর বিরুদ্ধে সোচ্চার কবিতা। ধন্য কবি সানজিদা। অনেক অনেক ভালো থাকুন। এমনি লেখা লিখুন।

      ReplyDelete
    2. মানসী বড়ুয়াFebruary 29, 2020 at 6:28 PM

      সানজিদা রুমি 'র ভ্রূণ ।অপূর্ব কবিতা। মাতৃত্বের শুরু একটা ভ্রূণ দিয়ে। তাকে হতে হল তরল রক্ত সমাজের কঠিন বাঁধা নিয়মে। তাইতো মার্ কাছে ভ্রূণের দাবি "-কেন হতে দিলি না পূর্ণাঙ্গ শরীর " -বীর্য অনেক ক্ষমতাবান আমাদের সমাজে। তাইতো শিশুটি এখন অন্ধ আস্তাকুঁড়ে।

      ReplyDelete
    3. রেহানা পারভীনFebruary 29, 2020 at 6:36 PM

      কবি ও লেখক সানজিদা রুমির ভ্রূণ কবিতা পড়ে বুকটা ভারী হয়ে গেল। পড়তে পড়তে কখন যে চোখ নোনা জলে ভরে গেল তা বুঝতেই পারিনি। এত মর্মস্পশী কবিতা যা পড়ে নিজেকে ধরে রাখা খুব কঠিন। রেহানা পারভীন

      ReplyDelete
    4. শেয়শ্রী চক্রবর্তীFebruary 29, 2020 at 6:43 PM

      কবি ও লেখক সানজিদা রুমির ভ্রূণ কবিতায়" ভালোবাসার চিহ্ন হয়ে এসেছিল গর্ভকোলে সবুজ ঘাসে লুটোপুটি খাবে -রঙিন পৃথিবী দেখবে বলে।" যে উপমা দিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার। শুধু এই লাইন টুকু নয় পুরো কবিতায় যে উপমা ব্যবহার করা হয়েছে তা অনন্য। আর বলিষ্ঠ বক্তব্য সাহসী কবিতা। অনেক ভালোবাসা।

      ReplyDelete
    5. সানজিদা তোমার ভ্রূণ কবিতা পরে মনটা সত্যিই খারাপ হয়ে গেল। কি সাহসিক আর বলিষ্ঠ বক্তব্য। এমন মায়েদের জন্য আমাদের খারাপ লাগে মনে মনে আফসোস করি। কিন্তু তোমার মত তাদের সিঞ্চিত কষ্ট নিয়ে লেখা খুব দুঃসাহসিক পদক্ষেপ। তুমি অন্তরে ধারণ করে কলমের কালী দিয়ে যে লাইনটি লিখেছ তার জন্য সাধুবাদ দেই "মানব জন্মের বড় লজ্জা এখন এই অন্ধ আস্তাকুঁড়ে।" ভালো থেকো আরো আরো এমন লেখা লেখো। তোমার এই কবিতাটা পড়ার অনুমতি চাইলাম। অনেক অনেক ভালোবাসা।

      ReplyDelete
    6. অদিতি মহসিনFebruary 29, 2020 at 8:26 PM

      রুমি দি তোমার ভ্রূণ কবিতা পড়ে মনটা সত্যিই খারাপ হয়ে গেল। শুধু সাহসিক আর বলিষ্ঠ বক্তব্য নয় । এমন মায়েদের জন্য আমাদের খারাপ লাগে মনে মনে আফসোস করি কিম্বা সমালোচনা করি এমন" অবৈধ " ( যা আপেক্ষিক ) কিন্তু তাদের কষ্টকে জন সমুকক্ষে তুলে ধরার সাহস কতটুকু ? দিদি তোমার সাহসিকতাকে আমি মনের ভেতর দিয়ে সাধুবাদ জানাই। অনেক ভালো থেকো গো। শরীরের যত্ন নিও। আরো এমন লেখা লিখতে হবে না ? তোমায় তো ভালো থাকতেই হবে।

      ReplyDelete
    7. অপূর্ব! খুব সুন্দর অনুভূতি রইলো বাস্তবের এই শিশুটিকে ঘিরে।কলংকময় সমাজের লোলুপ ইচ্ছার শাস্তি বহনকারী সেই নিরাপরাধ শিশু!

      ReplyDelete
    8. রুমি খুব মুন্সিয়ানার সাথে এই সমাজের নৈমিত্তিক অনাচার এবং একটি ভ্রূণের কষ্ট আর্তনাদ তুলে ধরে আমার অন্তরাত্মা ভীষণভাবে কাঁপিয়ে দিয়েছে
      সাধুবাদ কবি সাহসী উচ্চারণের জন্য
      আরো চাই এরকম কবিতা

      ReplyDelete
    9. সানজিদা রুমির 'ভ্রুন' কবিতায় একমাত্র পুরুষ মেহরাব রহমানের মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ যদিও বাকি সব পুরুষেরা নিশ্চুপ! এটাই হয়তো কবির রূঢ় বার্তার জ্বলন্ত প্রমান যে এই শতাব্দীতে 'বীর্য এতই ক্ষমতাবান'.
      এখানে কবি একজন মানবী যেকারণে তার ভাবনা আইন ও বিজ্ঞানএর সংজ্ঞায় 'প্রাণের জন্ম কখন' ছাড়িয়ে মাতৃত্বের আর মানবতার ভাবনা দিয়ে আমাদের প্রশ্ন করে. 'Fetus' কখন 'জীবন', শিশুর legitimacy এর সাথে inheritance, legal obligation এর বৈজ্ঞানিক আর আইনি ভাবনার উপরে 'মানুষ' হিসেবে একজন 'মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার' এই শতাব্দীতে আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি.
      আজকের পৃথিবীর বৈভবের এই উন্মগ্ন পরিবেশে, প্রচ্ছদসর্বস্ব এই অর্থহীন যাপিত জীবনে আমরা সমাজ সংসারের নিয়মের জঞ্জালের ভেতর, উটপাখির মতো বালুতে মুখ গুঁজে পালিয়ে, লুকিয়ে কাটিয়ে দিলাম.
      ধন্য হয়েছি সানজিদা রুমির মতো একজন বৌদি পেয়ে যার রূঢ়, সাহসী কণ্ঠস্বর আমার মতো একজন ভীরু, কাপুরুষ ননদীনিকেও ভাবনার খোরাক দিয়ে, মানবতার প্রশ্নে নাড়িয়ে দিয়ে যায় !!

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ